হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচুতে তুষার চিতাবাঘের ছবিটি এডিটেড

সম্প্রতি “হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচুতে তুষার চিতাবাঘ” শীর্ষক একটি তথ্যের সাথে হিমালয়ের চূড়ায় তুষার চিতার কিছু ছবি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

একই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন – আজকের পত্রিকা, সময় নিউজ, যুগান্তর, আমাদের সময়, কালবেলা, জনকণ্ঠ, নিউজ24, যমুনা টিভি, দৈনিক ইনকিলাব এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন- এখানে, এখানে এবং এখানে।
ভিডিওগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন – এখানে, এখানে এবং এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচুতে তুষার চিতাবাঘের ছবি তোলার দাবিটি সঠিক নয় বরং একেকটি ছবি একাধিক ছবি থেকে জোড়া লাগানো হয়েছে।

যে দাবি নিয়ে আলোচনা

মার্কিন ফটোগ্রাফার কিট্টিয়া পউলোস্কি (Kittiya Pawlowski) হিমালয় পর্বতে প্রায় ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় তার ক্যামেরায় তোলা স্নো লেপার্ড বা সাদা চিতার ছবি চলতি বছরের নভেম্বরের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। উক্ত পোস্টের পরই বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয় পউলোস্কির ছবিগুলো। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ছবিগুলো।

কিট্টিয়া পউলোস্কি তার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে এই ছবিগুলো তোলার পেছনের গল্প (Behind the scene) একটি ব্লগে বিস্তারিত আকারে লিখেছেন। “Ghost of the Himalayas” (আর্কাইভ) শিরোনামের ব্লগটিতে তিনি জানান, ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় আমার ক্যামেরার টেলিফটো লেন্সের দিকে তাকিয়ে, আমি মাউন্ট পুমোরির ছায়ায় কিছু লক্ষ্য করলাম। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এটি একটি শিলা, কিন্তু আমি যা খুঁজছিলাম ঠিক তাই ছিল।”

পউলোস্কি লিখেছেন, “৯ অক্টোবর রাতে চাঁদের ভৌতিক আলোয় ভেসে যাচ্ছিল হিমালয় চূড়া। কৃত্রিম আলো ছাড়াই দেখা যাচ্ছিল চারদিক। সাধারণত তুষার চিতা সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তাই এমন একটি ‍দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে আমাকে ঝুঁকি নিতেই হলো। ভোর ৪টার দিকে পায়ে জুতা গলিয়ে আমি বেরিয়ে পড়লাম। সাথে ২৫ পাউন্ড ওজনের ক্যামেরার আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি।”

কিট্টিয়া পউলোস্কির তোলা ছবিতে দেখা যায়, নেপালের হিমালয় পর্বতের খুম্বু হিমবাহের ‘’ফ্যান্টম অ্যালি’’ বা ‘‘ভূতের গলি’’ হিমবাহের চূড়ায় বসে রয়েছে একটি ‘‘তুষার চিতা’’। একই হিমবাহে এরকম আরও একটি ছবি তুলেছেন তিনি। তবে সেটি একটু ভিন্ন।

পউলোস্কি লিখেছেন,’‘পৃথিবীর অন্যতম নিষিদ্ধ ঘোষিত এলাকায় হেঁটে যাওয়ার পথে, প্রায় অক্সিজেনশূন্য বিরান এলাকা থেকে সবচেয়ে কঠিন ও ফলপ্রসূ ছবিটি আমি তুলেছি”। 

অর্থাৎ, কিট্টিয়া পউলোস্কি নিজের ব্লগেই লিখেছেন, তিনি স্নো লেপার্ড বা তুষার চিতার ছবি তুলেছেন।

সন্দেহ যেভাবে

ফেসবু্কে গত ২৬ নভেম্বর ‘Apu Nazrul’ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে “কত চোর এলো গেলো” শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে।

জনাব অপু নজরুল তার পোস্টে লিখেছেন, “কিত্তিয়া পওলোস্কি নামের এই সুন্দরী ভদ্রমহিলার নেপালের এভারেষ্ট সংলগ্ন খুম্বু অঞ্চলে (১৮০০০ ফিট প্লাস) তোলা তুষারচিতার ছবিগুলো সারা দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছিলো। ভদ্রমহিলা শুধুমাত্র মিডিয়ায় ওয়ান টাইম ইউজ কপিরাইট বা প্রিন্ট ভার্সন বিক্রি করেছেন ১৫০০ পাউন্ড করে। সব মিলিয়ে লাখ লাখ ডলার! ইন্সটাগ্রামে বাগিয়েছেন লাখ লাখ ফলোয়ার। বিজ্ঞাপন-এন্ডোর্সমেন্ট! অথচ এতোদিন পর জানা গেলো ছবিগুলো ফটোশপ! তার আজগুবি গল্প, অতীতে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফীর রেকর্ড না থাকা, তদন্তকারীদের র ফাইল দিতে গড়িমসি, ওয়াইল্ড লাইফ বিশেষজ্ঞদের ৬৩০০ মিটারে তুষারচিতা থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া এবং শেষতক ছবি বিশেষজ্ঞদের জাল ছবি হিসেবে শনাক্তকরণ কিত্তিয়ার তাসের ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে এক দেড় মাসেই!”

এই পোস্টের সূত্র ধরে কিট্টিয়া পউলোস্কি’র ওয়েবসাইটে উল্লিখিত তার ইন্সটাগ্রাম এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লিংকে খুঁজতে গিয়ে উভয় অ্যকাউন্টই বন্ধ পাওয়া যায়৷ যে অ্যাকাউন্টের পোস্টের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিত পেয়েছেন কিট্টিয়া পউলোস্কি, সেই অ্যাকাউন্ট হঠাৎ করে বন্ধ পাওয়া সন্দেহের উদ্রেক ঘটানোই স্বাভাবিক। 

অনুসন্ধান যেভাবে

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে ফ্রান্সভিত্তিক পর্বতারোহী, সাংবাদিক, লেখক এবং ফটোগ্রাফি বিষয়ক বিশেষায়িত ম্যাগাজিন ‘Alpine’ এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ নভেম্বর “THE FAKE SNOW LEOPARD : PHOTOMONTAGE SPREAD AROUND THE WORLD” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

অ্যালপাইন লিখেছে, “কিট্টিয়ার তোলা ছবিগুলো কোনো ধরণের কারসাজি (মূলত ফটোশপের মতো সফটওয়্যার ব্যবহার করে) করে বানানো হয়েছে। মাউন্টেন ফটোগ্রাফার ও মাউন্টেন ওয়াইল্ড লাইফ বিশেষজ্ঞের দল এ ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে এমনটাই রায় দিয়েছে। কিট্টিয়ার তোলা সবগুলো ছবির অন্তত তিনটিতে কয়েকটি ছবি জোড়া দিয়ে বানানো হয়েছে।”

ফ্রান্সের বিখ্যাত ওয়াইল্ড লাইফ এক্সপার্ট ভিনসেন্ট মুনিয়্যার অ্যালপাইনকে বলেছেন, “স্নো লেপার্ড নাম হলেও দূর্লভ এ প্রাণীটি খুব কমই বরফে পা রাখে। এরা মূলত তাদের খাবার পাওয়া যাবে এরকম পাথুরে এলাকাতেই থাকে। অধিকাংশ ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফার স্নো লেপার্ডকে খুব দ্রুত চলে যেতে দেখেছেন, যার কারণে এর ছবি তোলা প্রায় অসম্ভব।”

ভিনসেন্ট বলছেন, “কিট্টিয়ার ছবির স্নো লেপার্ড কোনভাবেই সত্য হতে পারেনা।”

অন্যদিকে মাউন্টেন ফটোগ্রাফাররা কিট্টিয়ার মাউন্ট পুমোরির ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা ছবিটি মাউন্ট নুপৎসের একটি শৈলশিরার অংশ বলে শনাক্ত করেছেন। এ শৈলশিরার উপরেই হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছিলো স্নো লেপার্ডকে।

ভিনসেন্ট বলছেন, “শৈলশিরার দুপাশের দেখানো অঞ্চল অন্তত দু কিলোমিটার ব্যবধানের এলাকা থেকে নিয়ে জোড়া দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাকি সব ছবিতেও একাধিক ছবি জোড়া দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। সবচেয়ে বড় কথা একটি ছবিতে দুই দিক থেকে সূর্যালোকের অস্তিত্ব মিলেছে!”

অ্যালপাইন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে পউলোস্কির কাছে চারটি ছবির হাই রেজ্যুলেশন কপি চাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে পউলোস্কি তাদের ছবিগুলো পাঠান। 

অ্যালপাইন কর্তৃপক্ষ ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখে, ছবিগুলো তোলা হয়েছে Nikon D850 ক্যামেরায়। ছবিগুলোর তারিখ উল্লেখ ছিল ০১/০১/২০১৮। এই ধরনের তারিখ সাধারণত উল্লেখ পাওয়া যায় ক্যামেরা কেনার সময়ে। সেটিংস না বদলালে ব্যাটারি লাইফ শেষ হয়ে গেলেও তারিখ একই থাকে। অধিকতর অনুসন্ধানে অ্যালপাইন কর্তৃপক্ষ কিট্টিয়া পউলোস্কিকে ফের মেইল করে ‘অপরিবর্তনীয় সোর্স ফাইল’ দেওয়ার অনুরোধ জানালে পউলোস্কি তাদের আর রিপ্লে করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে পরবর্তীতে কিট্টিয়া পউলোস্কি’র সাথে কথা বলতে মেইল মারফত যোগাযোগের চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। কিন্তু তার পক্ষ থেকে সাড়া মেলেনি।

কিট্টিয়া পউলোস্কি’র স্বীকারোক্তি

রিউমর স্ক্যানার টিমের এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলার মধ্যেই গত ২৮ নভেম্বর ফটোগ্রাফি, আর্ট এবং ইমেজিং টেকনোলজি বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘PetaPixel’ এ “Photographer Admits That Viral Snow Leopard ‘Photos’ Are Fake” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, “যে ফটোগ্রাফার হিমালয়ের তুষার চিতাবাঘের দর্শনীয় ছবি তোলার দাবি করেছেন তিনি স্বীকার করেছেন যে সেগুলো জোড়া লাগানো ছবি।”

উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে পেটাপিক্সেল কর্তৃপক্ষও কিট্টিয়া পউলোস্কি’র সাথে যোগাযোগ করে। অ্যালপাইনের মতো পেটাপিক্সেল কর্তৃপক্ষও কিট্টিয়া পউলোস্কি’র কাছে এডিটবিহীন অরিজিনাল ছবির ফাইল দিতে বললে সেগুলো দিতে অস্বীকৃতি জানান পউলোস্কি। তবে তিনি স্বীকার করেন, স্নো লেপার্ডের ছবিগুলো দুই থেকে চারটি ছবিকে জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

পেটাপিক্সেলের প্রতিবেদনে কিট্টিয়া পউলোস্কি’র ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের একটি বিবৃতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। 

উক্ত বিবৃতির বরাতে পেটাপিক্সেল জানায়, “আমার সমস্ত ছবি ফটোশপ এবং লাইটরুমে সম্পাদনা এবং প্রক্রিয়া করা হয়। কিছু ছবি কম্পোজিট, কিছু নয়। কিছু শুধুমাত্র হালকা retouched হয়। আমি সাংবাদিক নই। আমি কখনই বলিনি যে আমার ছবিগুলো কোথাও সম্পাদনা করা হয়নি।” 

পরবর্তীতে এই তথ্যের সূত্র ধরে কিট্টিয়া পউলোস্কি’র ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে গিয়ে “Disclaimer READ BEFORE CONTACTING ME” (আর্কাইভ) শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

পেটাপেক্সিলের প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিবৃতির অংশটি কিট্টিয়া পউলোস্কির লেখা ব্লগের শুরুতেই খুঁজে পাওয়া যায়।

পউলোস্কি তার ব্লগে লিখেছেন, “সারা বিশ্বের সংবাদ এবং মিডিয়া আমার ছবি চুরি করে ছবিগুলোর সাথে নিজস্ব অর্থ (meaning) জুড়ে দিয়ে প্রকাশ করেছে। তারা আমাকে জিজ্ঞাসাও করেনি যে, ছবিগুলো এডিটেড ছিল কিনা। তারা তাদের নিজস্ব উপায়ে ছবিগুলোকে ব্যাখ্যা করেছে এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের পাঠকদের বলেছে, যে ছবিগুলো সম্পাদনা করা হয়নি। এটা অসত্য, আমি সবসময় আমার ছবি এডিট করি।”

সবগুলো ছবি তার নিজের তোলা এবং ছবির পেছনের গল্পগুলো সত্য দাবি করে পউলোস্কি বলছেন, “সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে, আমি নেপাল ভ্রমণ করেছি, ছবি তুলেছি, এডিট করেছি এবং আমার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছি। এই সিরিজের পেছনের গল্পটা সত্যি, সব ছবিই আমার তোলা। আমি ছবিগুলো তুলতে ১০৩ মাইল পথ হেঁটেছি।”

নেপাল সফরে ছবিগুলো তোলার উদ্দেশ্যের বিষয়েও পরিষ্কার করেছেন পউলোস্কি। “সমগ্র সিরিজের জন্য আমার উদ্দেশ্য ছিল তুষার চিতা সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। আমি ৫০টিরও বেশি প্রিন্ট বিক্রি করেছি এবং স্নো লেপার্ড ট্রাস্টে ৭৮৭.৫০ ডলার দান করেছি।”

পউলোস্কি অনেকটা বিরক্তির সুরেই লিখেছেন, “আমি আমার সমস্ত ছবির জন্য প্রসেসিং ভিডিও, RAW ফাইল ইত্যাদি প্রদান করার দাবি করে ইমেইল পাচ্ছি। আমি এটা করতে বাধ্য নই। শত শত ফটোগ্রাফার আছে যারা তাদের ছবি এডিট করে, ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে, বড় গাধার চাঁদ, বজ্রপাত, ব্লার ইফেক্ট, কুয়াশা ইত্যাদি যোগ করে। আমি বিস্তারিত ভিডিও তৈরি করব না বা প্রতিটা ছবিকে কীভাবে প্রসেস করা হয়েছে সে বিষয়েও জানাবো না। অন্য কাউকেই এই কাজটি করতে হয় না, তাহলে কেন আমিই কেন সে কাজ করতে একমাত্র ব্যক্তি হবো? পৃথিবীর প্রতিটি ম্যাগাজিনে ফটোশপ করা দেহ/মুখ/ইত্যাদি সহ মডেলের ছবি সম্পাদনা করা হয়েছে। এবং তারাও এটি করেনি।”

ফটোগ্রাফি এবং আর্ট মেকিং তার শখের কাজ জানিয়ে ২৪ বছর বয়সী এই তরুণী ব্লগের শেষাংশে লিখেছেন, “ছবি তুলতে/সম্পাদনা করতে আমি পছন্দ করি এবং সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং আমাদের গ্রহকে সাহায্য করার চেষ্টা করি।”

ছবিগুলোর বিষয়ে তিনি হুমকি পেয়েছেন দাবি করে পউলোস্কি জানান, “যেহেতু আমি এই সবের জন্য প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছি, তাই আমি আমার সামাজিক অ্যাকাউন্টগুলো সরিয়ে নিয়েছি।”

অর্থাৎ, নেপালে হিমালয়ে নিজের ক্যামেরায় তোলা সাদা চিতাবাঘের ছবির সত্যতা নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে ছবির ফটোগ্রাফার কিট্টিয়া পউলোস্কি স্বীকার করেছেন যে ছবিগুলো তিনি এডিট করেছেন। স্নো লেপার্ড দেখেছিলেন বা ছবি তুলেছিলেন কিনা সে উত্তর না দিলেও তিনি স্বীকার করেছেন, কিছু ছবি তিনি একাধিক ছবি থেকে জোড়া লাগিয়েছেন।

মূলত, মার্কিন ফটোগ্রাফার কিট্টিয়া পউলোস্কি গত নভেম্বরের শুরুর দিকে হিমালয় পর্বতে প্রায় ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় তার ক্যামেরায় তোলা স্নো লেপার্ড বা সাদা চিতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। পরবর্তীতে ফ্রান্সভিত্তিক বিশেষায়িত ম্যাগাজিন ‘Alpine’ জানায়, কিট্টিয়ার তোলা সবগুলো ছবির অন্তত তিনটি ছবি কয়েকটি ছবি জোড়া দিয়ে বানানো হয়েছে। এ বিষয়ের বিশেষজ্ঞের দল ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে এমনটাই রায় দিয়েছে। ছবির সত্যতা নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে ছবির ফটোগ্রাফার কিট্টিয়া পউলোস্কিও স্বীকার করেছেন যে ছবিগুলো তিনি এডিট করেছেন। কিছু ছবি তিনি একাধিক ছবি থেকে জোড়াও লাগিয়েছেন বলে এক ব্লগ পোস্টে জানান তিনি। তাছাড়া, ফ্রান্সের বিখ্যাত ওয়াইল্ড লাইফ এক্সপার্ট ভিনসেন্ট মুনিয়্যার বলেছেন, অধিকাংশ ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফার স্নো লেপার্ডকে খুব দ্রুত চলে যেতে দেখেছেন, যার কারণে এর ছবি তোলা প্রায় অসম্ভব।

উল্লেখ্য, কিট্টিয়া পউলোস্কি এর আগে ফাইন আর্ট এবং ম্যানিপুলেশনের জন্য বেশকিছু পুরষ্কার পান বলে জানিয়েছেন তার ওয়েবসাইটে।  

সুতরাং, হিমালয়ের ১৮ হাজার ফুট উঁচুতে তুষার চিতাবাঘের ছবি তোলার দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img