গরু চুরির দায়ে নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সাথে অসদাচরণের জেরে ছাত্রদল নেতাসহ এই ০৬ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে

সম্প্রতি ‘গুরু চুরির দায়ে ছাএদল নেতা সহ আটক ৬’ শীর্ষক শিরোনামে কতিপয় ব্যক্তির একটি ছবিযুক্ত ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবির ব্যক্তিরা গরু চুরির দায়ে আটক হননি। প্রকৃতপক্ষে, ছাত্রদল পরিচয়ে কতিপয় ব্যক্তির রাজধানীর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনায় আটককৃত ৬ ব্যক্তির ছবি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম Bangla News 24 এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ মে ‘মিরপুরে অনুষ্ঠান করার অনুমতি নিয়ে হাতাহাতি, আটক ৬’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটির সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মে রাজধানীর মিরপুর-১৩ নম্বরে সাইক কলেজ অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে অনুষ্ঠান করার অনুমতি নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয়রা তাদের আটক করে আর্মিকে খবর দিলে ক্যাম্প থেকে আর্মি সদস্যরা এসে ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায়। আটকরা হলেন: রেজাওয়ানুল করিম, বাবা মো. আশরাফুল, ফারহান শাহরিয়ার, বাবা ইব্রাহিম খলিল, ফয়সাল মাহামুদ, বাবা মমিনুল ইসলাম, আতাউর রহমান, বাবা আতায়ে রাব্বি, ইশতিয়াক খান, বাবা মো. ইব্রাহিম খান ও আরিয়ান ইসলাম, বাবা সালাউদ্দিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওইদিন দুপুরে ছাত্রদল পরিচয় দিয়ে প্রিন্স নামে একজন সাইক কলেজ অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে এসে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে একটি অনুষ্ঠান করতে চায় বলে জানায়। চেয়ারম্যান তখন ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় অনুষ্ঠান করলে ক্লাসের ব্যাঘাত ঘটবে এবং প্রতিষ্ঠানটির কোনো প্রোগ্রাম ডে তে তারা অনুষ্ঠান করতে পারবে বলে জানান। এসময় তাদের মধ্যে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলে। পরে বিকেলে ছাত্রদলের নেতা পরিচয় দিয়ে ফয়সাল নামক ব্যক্তি ৩০ থেকে ৪০ জন যুবক সঙ্গে নিয়ে চেয়ারম্যানের রুমে প্রবেশ করে। সেখানে একপর্যায়ে হাতাহাতির মতো ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ছাত্ররা তাদের আটকে রাখে। ছাত্ররা ও এলাকাবাসীরা মিলে যৌথ বাহিনীকে খবর দেয়। ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

প্রতিবেদন থেকে আটককৃত ৬ ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় থেকে একাধিক ব্যক্তি ছাত্রদলের কর্মী বলে জানা গেলেও উক্ত ঘটনায় গরু চুরির মতো কোনো বিষয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি।

একই বিষয়ে অনলাইন গণমাধ্যম Dhaka Post এর ওয়েবসাইটে গত ২৬ মে ‘মিরপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি, আটক ৬’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই ছবি ও তথ্য পাওয়া যায়। 

সুতরাং, গরু চুরির দায়ে ছাত্রদল নেতাসহ ৬ জন আটক দাবিতে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠান করা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডায় ছাত্রদল কর্মীসহ ৬ জন আটকের ঘটনার ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img