চীনে গত ০৬ আগস্টের ভূমিকম্পে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুইটি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
ছবিগুলো ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি, নয়া দিগন্ত।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে চীনের ভূমিকম্পের ঘটনার নয় বরং পূর্বের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ছবিকে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
ছবি যাচাই ০১
এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি।
কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।
ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা Reuters এর ওয়েবসাইটে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ছবির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের মে মাসে চীনে সিচুয়ান প্রদেশে হওশা ভূমিকম্পের ঘটনার দৃশ্য এটি।
অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি ১৫ বছরের পুরোনো।
ছবি যাচাই ২
এই ছবিটি ব্যবহার করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নয়া দিগন্ত।
কিন্তু ছবিটি উক্ত ঘটনার নয়।
ছবিটির মূল সূত্রের বিষয়ে অনুসন্ধানে মানবাধিকার সংস্থা World Vision এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার ভূমিকম্পের ঘটনার দৃশ্য এটি।
অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ছবিটি চীনের নয়, ইন্দোনেশিয়ার।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ছবি শীর্ষক কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি বরং কিছু গণমাধ্যমে ছবিগুলো সংগৃহীত এবং কোনো কোনো গণমাধ্যমে ছবির ক্যাপশনে কোনো তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ছবিগুলো ব্যবহার করে সংগৃহীত উল্লেখ কিংবা কোনো তথ্যই উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই ছবিগুলো চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়। এতে করে নেটিজেনদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া অমূলক নয়।
মূলত, চলতি বছরের গত ০৬ আগস্ট চীনে ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দেশীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার দাবিতে দুইটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয়। চীন ও ইন্দোনেশিয়ার পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ছবিকে চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার খবরে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে আলোচিত ছবিগুলোর ক্যাপশনে ফাইল ফটো বা পুরোনো ঘটনার ছবি শীর্ষক কোনো তথ্যও দেওয়া হয়নি। এতে করে স্বাভাবিকভাবে ছবিগুলো চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয়, যা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্বে পুরোনো ও ভিন্ন স্থানের দুইটি ছবি এবং সিজিআই পদ্ধতিতে তৈরি একটি ফুটেজকে ভূমিকম্পের পূর্বে মরক্কোর আকাশে রহস্যময় আলো দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচার করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, চীনের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ঘটনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক পুরোনো ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।