জামায়াত-বিএনপি সংঘর্ষে জামায়াত নেতাকে কুপিয়ে হত্যার দাবিতে আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি-এর নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাকুপির ঘটনায় জামায়াতের একজন নেতা খুন হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন দাবির একটি পোস্ট এখানে (আর্কাইভ) এবং ফেসবুকে প্রচারিত এমন দাবির একটি পোস্ট এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি-র নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জামায়াত নেতা নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়ার হত্যার ২০২৪ সালের জুন মাসের ভিডিওকে (সিসিটিভি ফুটেজ) ভুয়া দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে News24Narayanganj নামের একটি স্থানীয় গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২৮ জুন “নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ হত্যা কান্ডের লোমহর্ষক ভিডিও ফুটেজ….” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটির সঙ্গে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও, পোস্টটি থেকে জানা যায় এটি  নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ হত্যাকাণ্ডের ভিডিও।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৯ জুন আ.লীগ নেতা হত্যার ভিডিও ভাইরাল শীর্ষক শিরোনামে উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Screenshot: Jugantor 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক এবং আলীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সুরুজ মিয়ার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার। যেটি সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

মামলার সূত্রে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, “এলাকায় চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য স্থানীয় সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন ওরফে হিরা ও সালাউদ্দিন সালুসহ তাদের বাহিনীর লোকজনকে সুুরুজ মিয়া অনুরোধ করেন। যার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে হিরা ও সালু বাহিনীর লোকজন সুরুজ মিয়ার বড় ছেলে রাজু ও জনি ওপর হামলা করে। এসময় তাদের উদ্ধার করতে গেলে সুরুজ মিয়ার ওপরও তারা হামলা চালায়। পরবর্তীতে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরুজ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।”

সুতরাং, নারায়গঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার পুরোনো ভিডিওকে জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষে জামায়াত নেতা নিহত হওয়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img