মুসলিম আ.লীগ চেয়ারম্যানকে হত্যার ভিডিও বাংলাদেশে হিন্দু বৃদ্ধকে হত্যার দৃশ্য দাবিতে ভারতে অপপ্রচার

গত আগস্ট মাস থেকে মুসলিম কর্তৃক এক হিন্দু বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার পর মুর্তির সাথে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে দাবিতে দুইটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

গত আগস্ট মাসে একই দাবিতে একই দৃশ্য সম্বলিত ভিডিও যুক্ত করে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে আরেকটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রচারিত ভিডিওগুলো বাংলাদেশে মুসলিমদের দ্বারা একজন হিন্দু বৃদ্ধকে হত্যা করে মূর্তির সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এগুলো গত আগস্টে ঝিনাইদহের পোড়াহাটী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন নামের একজন মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যার পর পায়রা চত্বরের মূর্তির সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটানোর দৃশ্য।

অনুসন্ধানে গত ০৫ আগস্ট রুকন শেহাবি রুকন এবং আরজে মুন নামক দুইটি অ্যাকাউন্ট থেকে দুইটি ভিডিও (, ) পোস্ট খুঁজে (আর্কাইভ– , ) পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওগুলোর মিল লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্ট দুইটিতেই দাবি করা হয়েছে, ভিডিওতে থাকা লাশটি ঝিনাইদহের হিরন নামের একজন চেয়ারম্যানের। 

নাম এবং স্থানের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে গত ০৫ আগস্ট “গুলি করেও বাঁচতে পারলেন না আলোচিত হিরণ চেয়ারম্যান” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা ৯নং পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর হিরনের লাশ শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বরে টাঙিয়ে রাখা হয়।

একই দিন কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকেলে বিক্ষুব্ধরা হিরণের বাড়ি ঘেরাও করলে তাদের ওপর গুলি চালানো হয়, এতে কয়েকজন আহত হন। পরে জনতা বাড়িতে আগুন দিলে হিরণসহ চারজন আগুনে পুড়ে মারা যান। বিক্ষুব্ধ জনতা হিরণের মরদেহ ভ্যানে করে শহরের পায়রা চত্বরে নিয়ে যায়।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত করতে রিউমর স্ক্যানার টিম গুগল ম্যাপ থেকে পায়রা চত্বরের ছবি সংগ্রহ করে এবং এর সঙ্গে ভিডিওগুলোতে দৃশ্যমান স্থাপনার তুলনা করে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওতে দৃশ্যমান স্থাপনার সঙ্গে পায়রা চত্বরের অবকাঠামোর হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison By Rumor Scanner 

সুতরাং, রাজনৈতিক কারণে মুসলিম চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনকে হত্যার ভিডিও বাংলাদেশে হিন্দু বৃদ্ধকে পিটিয়ে মূর্তির সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়ার দাবিতে ভারতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img