মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধর্ষিত নারী দাবিতে প্রচারিত ছবিটি জার্মানির ভিন্ন ঘটনার 

গত ৫ জানুয়ারি সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে আয়োজিত একটি লাইভ টকশোতে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম। উক্ত টকশোকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ‘ডালিম বললো দুজন নারী ধর্ষিত হয়েছে যুদ্ধে৷ এখানে তিনজন নারী পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে উলঙ্গ অবস্থায় পালাচ্ছে৷’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে ধর্ষিত বাঙালি নারীদের পালানোর নয় বরং ১৯৪২ সালে জার্মানির ভিন্ন একটি ঘটনার পুরোনো ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফটো আর্কাইভ ওয়েবসাইট Fototeca Gilardi এ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯৪২ সালে জার্মানির কোনো এক অজ্ঞাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ধারণকৃত ছবি। ছবিতে তিনজন ইউক্রেনীয় যুবতীকে ক্যাম্পে পৌঁছানোর পর নগ্ন অবস্থায় স্থান ও জীবাণুমুক্তকরণের স্থানের দিকে দৌড়ে যেতে বাধ্য করার মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দী করা হয়েছিল। 

এছাড়া, স্টক ফটো ওয়েবসাইট গেটি ইমেজেসে Fototeca Storica Nazionale এর সৌজন্যে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ ছবিটির বিবরণী থেকেও ছবিটি ধারণের স্থান সম্পর্কে একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন জার্মানির কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের ছবিকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধর্ষিত নারীদের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img