ফেসবুকে প্রচারিত পণ্য মূল্যের তালিকাটি সাধারণ বাজারের জন্য নয়

সম্প্রতি, “১৭ তারিখ সোমবার হতে ১ লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, ১ কেজি চিনি ৫৫ টাকা, ১ কেজি মসুর ডাল ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।” শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

ফ্যাক্টচেক

উল্লিখিত মূল্যে সয়াবিন তেল, চিনি এবং মসুর ডাল বিক্রির তথ্যটি সাধারণ ভোক্তা বাজারের জন্য নয় বরং এই মূল্যে (ভর্তুকি) গত ১৭ অক্টোবর হতে নিম্ন-আয়ের মানুষের কাছে পণ্য বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম আরটিভি’র অনলাইনে সংস্করণে গত ১৭ অক্টোবর “টিসিবিতে ১১০ টাকায় তেল, ৫৫ টাকায় চিনি বিক্রি শুরু আজ” শীর্ষক দাবিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৭ অক্টোবর হতে ঢাকাসহ সারাদেশে নিম্ন-আয়ের ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য (তেল, চিনি, ডাল ও পেঁয়াজ) বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

প্রতিবেদনটি হতে আরো জানা যায়, এক জন ফ্যামিলি কার্ডধারী ৫৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ এক কেজি চিনি, ৬৫ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ দুই কেজি মসুর ডাল, ১১০ টাকা দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল এবং প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে দুই কেজি পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।

এছাড়া, টিবিসি’র এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত তথ্য মূলধারার গণমাধ্যম প্রথমআলো, সমকাল, একাত্তর টিভি সহ প্রায় সকল সংবাদমাধ্যমেই প্রচারিত হয়েছে।

পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৬ অক্টোবর দেওয়া বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ৯০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা।

তাছাড়া, গত ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বর্তমানে ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৮ টাকা।

এছাড়া, খুচরা বাজারগণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রতি কেজি মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা এবং সরু মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়।

মূলত, গত ১৬ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৭ অক্টোবর হতে সারাদেশে নিম্ন-আয়ের ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির ঘোষণা দেয় টিসিবি। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পণ্যমূল্যকেই বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ ব্যতীত ফেসবুকে প্রচারের ফলে প্রচারিত পণ্যমূল্য তালিকাটি সাধারণ ভোক্তা বাজারের জন্য ভেবে পণ্যমূল্য নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে।

সুতরাং, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য টিসিবি কর্তৃক বিক্রিত পণ্যের ভর্তুকি মূল্য টিসিবির কথা উল্লেখ ব্যতীত ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img