বাংলাদেশে চলমান সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে দেশে ফিরে ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং আন্দোলনের মাত্রা বেড়ে সংঘর্ষ ও সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে বহু হতাহতের ঘটনাও ঘটে। আন্দোলনের এই প্রেক্ষাপটে একজন পুরুষ নারী সেজে নারীদের মধ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে ধরা পড়েছে দাবিতে একজন পুরুষের বোরকা পরিহিত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচ্য ছবিটি কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত নয় বরং এটি ২০১৯ সালের একটি ভিন্ন ঘটনার ছবি।
বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে এমটিনিউজ২৪ নামের একটি অনলাইন পোর্টালে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি “বোরকা পরে স্ত্রীর পরীক্ষার হলে গিয়ে ধরা পড়লো স্বামী!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে হুবহু একই ছবি ব্যবহার হতে দেখা যায়।
প্রতিবেদনটিতে জানা যায়, মাহমুদুল হাসান নামের একজন ব্যক্তি তার স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহে বোরকা পরে ছদ্মবেশে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে স্ত্রীর পরীক্ষা চলাকালীন তাকে পর্যবেক্ষণ করেন। বোরকা পরে পুরুষের বাথরুম থেকে নারী বের হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে স্ত্রীকে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বোরকা পরে ছদ্মবেশে কলেজে প্রবেশের ঘটনাটি স্বীকার করেন তিনি।
উক্ত সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একাধিক (১,২) মূলধারার গণমাধ্যমেও অনুরূপ তথ্য পাওয়া যায়।
মূলত, ২০১৯ সালে মাহমুদুল হাসান নামের এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহে বোরকা পরে ছদ্মবেশে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে ধরা পড়ে। ২০১৯ সালের উক্ত ঘটনার ছবি ব্যবহার করে কোটা আন্দোলনে একজন পুরুষ নারী সেজে নারীদের মধ্যে আন্দোলন করতে গিয়েছেন দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, ২০১৯ সালের ভিন্ন ঘটনার একটি ছবি বর্তমান কোটা আন্দোলনে একজন পুরুষ নারী সেজে নারীদের মধ্যে আন্দোলন করতে গিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
