শেখ হাসিনা প্রবেশের পর থেকে ভারতে অশান্তি শুরু হয়েছে শীর্ষক মন্তব্য মমতা ব্যানার্জী করেননি

গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে গত ৯ আগস্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এক শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসককে নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগে রাস্তায় নেমে আসে প্রায় গোটা রাজ্য। এরই প্রেক্ষিতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে উদ্ধৃত করে ‘শেখ হাসিনা প্রবেশের পর থেকে ভারতে অশান্তি শুরু হয়েছে’ শীর্ষক দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ‘শেখ হাসিনা প্রবেশের পর থেকে ভারতে অশান্তি শুরু হয়েছে’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায় সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি অন্তত গত ১৮ আগস্ট থেকে পাওয়া যাচ্ছে- , , । তবে এসব পোস্টে কোনো সূত্র উল্লেখ নেই।

স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে এক শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসককে নিপীড়ন, ধর্ষণ এবং হত্যার কলকাতার উত্তাল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে মমতা ব্যানার্জী এমন কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য করলে তা সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হতো কিন্তু আলোচিত দাবির সপক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতীয় গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তবে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ০৫ আগস্ট ‘নিউজ18 বাংলা’ এর ওয়েবসাইটে ‘Mamata Banerjee: ‘বাংলাদেশ নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না, যা বলার ভারত সরকার বলবে’: মুখ্যমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠে এল বাংলাদেশের পরিস্থিতি। মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, ‘‘বাংলাদেশ নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না। ফেসবুক বা কোনও জায়গায় কিছু পোস্ট করবেন না। যা বলার ভারত সরকার বলবে৷’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতর্কবার্তা রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন এই বার্তা দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

রাজ্যবাসীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, ‘‘বাংলার সবাইকে আমরা শান্ত থাকতে অনুরোধ করব। কেউ যেন উত্তেজনা না ছড়ায়। প্ররোচনায় পা না দেয়। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যা জানাবেন, তাই আমরা করব।’’

এছাড়া, গত ১৪ আগস্ট ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ এর ওয়েবসাইটে ‘বাংলাদেশের মতো আমার সরকারও ফেলবে ভাবছে? আমি ক্ষমতার মায়া করি না! পাল্টা আক্রমণে মমতা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, মমতার কথায়, ‘‘আরজি করের ঘটনা নিয়ে সিপিএম এবং বিজেপি রাজনীতি করছে। বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের ঘটনা টেনে এনে এখানেও ক্ষমতা দখল করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি ক্ষমতার মায়া করি না। যত দিন বাঁচব, মানুষকে ন্যায়বিচার এনে দেব। এই ঘটনা জানার পরেও আমি পুলিশকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা হাই কোর্টে গেলেন।’’

সুতরাং, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে উদ্ধৃত করে ‘শেখ হাসিনা প্রবেশের পর থেকে ভারতে অশান্তি শুরু হয়েছে’ দাবিতে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img