গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহরে ইসরায়েলের হামলা দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, গাজায় চলমান ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। পরবর্তীতে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ ও গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের সৈন্যরা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নয় বরং, এটি ইন্দোনেশিয়ার মানাদো বন্দরে একটি যাত্রীবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Joecel Lapinig নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি ইন্দোনেশিয়ার মানাদো বন্দরের দৃশ্য। চলতি বছরের ২০ জুলাই ‘KM বার্সেলোনা-৫’ নামক একটি ফেরিতে তালিসে দ্বীপের কাছে আগুন ধরে যায়। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজন গর্ভবতী যাত্রীসহ পাঁচজন নিহত হন এবং অনেক যাত্রী সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মরক্ষা করেন। 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সংযুক্ত আরিব আমিরাত ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘গালফ টুডে’ এর ওয়েবসাইটে গত ২০ জুলাইয়ে ‘VIDEO: Indonesia passenger ferry fire kills five as hundreds rescued’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের কাছে একটি যাত্রীবাহী ফেরিতে অগ্নীসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উদ্ধারকারীরা একজন গর্ভবতী নারীসহ পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করেন। 

এছাড়া, ‘Kigali Today’ নামক আরেকটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একই ঘটনার বিষয়ে গত ২২ জুলাই প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেখান এটিকে ইন্দোনেশিয়ার ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে নৌ উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সঙ্গে এই ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ার মানাদো বন্দরে যাত্রীবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিওকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের সৈন্যরা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img