সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে এক নারীকে এক বৃদ্ধের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতে দেখা যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদের মা।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এক্স পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওতে বৃদ্ধের সাথে অশোভন আচরণকারী নারী আবদুল হান্নান মাসুদের মা নন। উক্ত ভিডিওটি ধারণকারী ব্যক্তিই বিষয়টি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন।।
ভিডিওটির সূত্র খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ৩ ফেব্রুয়ারি ‘Sirajul Islam’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ভিডিওর ক্যাপশন অনুযায়ী, এটি একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জন্য ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনা। ভিডিওতে থাকা নারী প্রকৃতপক্ষে ভবন নির্মাণের ঠিকাদারের স্ত্রী।

পরবর্তীতে, ওই একই ফেসবুক আইডি থেকে ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনা নিয়ে আরও দুটি ভিডিও পোস্ট করা হয়, যেখানে আলোচিত ভিডিওতে থাকা বৃদ্ধকে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওগুলোতে তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে পরিচয় দেন এবং ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের অবহেলার অভিযোগ তোলেন। ভিডিওগুলোর বিবরণ অনুযায়ী, ঠিকাদারকে ডাকার পর তার স্ত্রী ঘটনাস্থলে আসেন এবং এরপরই বিরোধের সূত্রপাত হয়।
এই ঘটনা ঘিরে পোস্ট করা দুটি ভিডিওতেই ‘লক্ষ্মীপুর’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে। বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম সরাসরি সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, ভিডিওর ঘটনাটি লক্ষ্মীপুর জেলার এবং ভিডিওতে থাকা নারী এক ঠিকাদারের স্ত্রী। এছাড়া ভিডিওটি তার নিজের মোবাইলে ধারণ করা বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
এছাড়া, এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম আবদুল হান্নান মাসুদের সাথে কথা বলেছে। তিনি জানান, ভিডিওতে থাকা নারী তার মা নন এবং তার পারিবারিক ঠিকানা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায়।
উল্লেখ্য, হাতিয়া নোয়াখালী জেলার একটি উপজেলা, আর লক্ষ্মীপুর চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত একটি পৃথক জেলা। মেঘনা নদী দ্বারা বিভক্ত হওয়ায় এই দুই স্থানের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। তবে নৌপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। ভৌগোলিকভাবে তুলনামূলকভাবে কাছাকাছি হলেও নদীপথের কারণে দুই স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দূরত্ব বিদ্যমান।
সুতরাং, আলোচিত ভিডিওতে থাকা নারী আবদুল হান্নান মাসুদের মা দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Facebook posts by Sirajul Islam: 1,2,3.
- Statement from Sirajul Islam.
- Statement from Abdul Hannan Masud.