গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলটির নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জে যান। তারা পৌঁছানোর আগেই সমাবেশস্থলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরপরও সমাবেশ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তবে পরবর্তীতে বিকেলেই সেনাবাহিনীর এপিসি (আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার) ব্যবহার করে তাদের গোপালগঞ্জ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দিরভর সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচজন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)-এর সহ-মুখপাত্র ফারদিন হাসানের একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ১৮ জুলাই মধ্যরাতে দেওয়া পোস্টে তিনি দাবি করেন, “এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে একটি মিলিশিয়া বাহিনী প্রস্তুতি নেয় গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের হত্যা করার। এই জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য তিনদিনব্যাপি একটা ট্রেনিং ক্যাম্পও করে তারা। কিন্তু সমাবেশের দিন তাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।” এই পোস্টের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি গোপালগঞ্জে মুজিব বাহিনীর ট্রেনিংয়ের দৃশ্য।

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
একই দাবির এক্স পোস্ট দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি বাংলাদেশের নয় বরং ২০১২ সালে ভারতের মধ্যাঞ্চলের ছত্তিশগড় রাজ্যের মাওবাদী সদস্যদের প্রশিক্ষণকালীন সময়ের ছবি এটি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপির জাপানভিত্তিক সংবাদপত্র এএফপিবিবি’র একটি প্রতিবেদনে মূল ছবিটির সন্ধান মেলে। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে ছবিটি সম্পর্কে বলা হয়, ২০১২ সালের ৮ জুলাই ভারতে ছবিটি তোলা হয়৷ সে সময় মধ্য ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে মাওবাদী সদস্যদের প্রশিক্ষণের সময়ের দৃশ্য এটি।

২০১২ সালের আগস্টে বিবিসির একটি প্রতিবেদনেও একই ছবির সন্ধান পাওয়া যায়।
সুতরাং, গোপালগঞ্জে ‘মুজিব বাহিনী’ ট্রেনিং নিচ্ছে দাবিতে ভারতের মাওবাদীদের ট্রেনিং ক্যাম্পের পুরোনো ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- AFP BB: インドの毛沢東主義派ゲリラ、急襲作戦受け37人死亡 多くは女性