সম্প্রতি, গাজীপুরে ধর্ষণের বিচার না পাওয়ায় মেয়েকে নিয়ে বাবা ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরে ধর্ষণের জেরে মেয়েকে নিয়ে বাবার আত্মহত্যার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, বরং এটি ২০১৭ সালের একটি পুরোনো ঘটনা।
দাবিকৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল মূল ধারার গণমাধ্যম এনটিভির ওয়েবসাইটে ‘ধর্ষণের বিচার না পাওয়ায় মেয়েকে নিয়ে বাবার আত্মহত্যা!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজীপুরের শ্রীপুরে বাবা হজরত মাহমুদ (৬৫) ও তার পালিত কন্যা আয়েশা আক্তার (৭) চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের দাবি, আয়েশা দুই মাস আগে ফারুক নামের এক যুবকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন, কিন্তু থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো বিচার পাননি। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলেও ধামাচাপা দেন।
পরবর্তীতে, হজরত মাহমুদের স্ত্রী হালিমা স্থানীয় কিছু যুবকের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ দায়ের করলে আবুল হোসেন আবারও সমাধানের দায়িত্ব নেন কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেননি। বিচার চাইতে গেলে দুর্বৃত্তরা হজরত মাহমুদ ও তার পরিবারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে, তারা হজরতকে বাড়িতে গিয়ে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
বিচার না পাওয়ার হতাশা ও প্রাণনাশের আতঙ্কে হজরত তার মেয়েকে নিয়ে শ্রীপুর রেলগেট এলাকায় যান। চলন্ত তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন আসার সময় তিনি প্রথমে মেয়েকে নিচে ফেলে দেন, তারপর নিজেও ঝাঁপ দেন। ঘটনাস্থলেই বাবা-মেয়ের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন ও তার ছেলে মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।
পরবর্তীতে, ২০১৭ সালের ২৭ মে প্রকাশিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজীপুরের আলোচিত এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফারুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সুতরাং, ২০১৭ সালে গাজীপুরে ধর্ষণের জেরে মেয়েকে নিয়ে বাবার আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।