সম্প্রতি “অনু মহন্ত অনেকদিন ধরে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। বাবা রুদ্র মহন্ত অনেকদিন ধরেই চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন।সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সার বিভাগে চিকিৎসাধীন আছে।” শীর্ষক শিরোনামে এক শিশুর কয়েকটি ছবি সংযুক্ত করে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
একই দাবিতে একটি অনলাইন পোর্টালে প্রচারিত সংবাদ দেখুন; দৈনিক শিক্ষা ডটকম (আর্কাইভ)
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অণু মহন্তের চিকিৎসা সহায়তার দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো কোনো বাংলাদেশী শিশুর নয় বরং এগুলো সায়ন্তিকা নামে অসুস্থ এক ভারতীয় শিশুর ছবি।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে “Battling End-Stage Kidney Disease, My Daughter Needs Rs 6 Lakh To Survive.” শীর্ষক শিরোনামে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম “ketto” এর ওয়েবসাইটে একটি পোস্টে শিশুটির মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, Ketto এর ফেসবুক পেজেও শিশুটির জন্য ফান্ডরাইজিং বিষয়ক পোস্ট পাওয়া যায়।
মূলত, ছবিটি সায়ন্তিকা নামে ভারতীয় এক শিশুর। তার মায়ের নাম তপসী। সায়ন্তিকা ২০১৮ সাল থেকে কিডনী বিকল রোগে ভুগছিলো। ফান্ডরাইজিং ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬ লাখ রুপি প্রয়োজন ছিল। পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকার যোগাড় হওয়ায় ২০২১ সালেই ভারতের ব্যাঙ্গালোরের সেইন্ট জন’স মেডিকেল হাসপাতাল থেকে তার কিডনী প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়। বর্তমানে সে সুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে। ফলে গত বছরই তার চিকিৎসার জন্য শুরু হওয়া ফান্ড রাইজিং কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে অণু নামে আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদনকৃত পোস্টগুলোতে উল্লেখিত ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে (01765808698) যোগাযোগ করা হলে তার কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিগত কয়েকমাস যাবত শুধুমাত্র নাম ও ছবি পরিবর্তন করে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণা মূলক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রিউমার স্ক্যানার টিম পূর্বেও বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে প্রতারণার উদ্দ্যেশ্যে আর্থিক সাহায্য চেয়ে করা পোস্টগুলোকে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সুতরাং, সম্প্রতি আর্থিক সাহায্যের নামে প্রতারণার উদ্দ্যেশ্যে ভারতীয় শিশু সায়ন্তিকার বাংলাদেশী রোগাক্রান্ত শিশু অণুর ছবি দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।