সম্প্রতি, “ছবিতে যেই আসামিকে দেখতে পাচ্ছেন, তার অপরাধ হচ্ছে, তিনি তার ৩ বছর বয়সি মেয়ের ধর্ষককে হত্যা করেন। কিন্তু হত্যা করার পূর্বে তিনি ধর্ষককে গাছের সাথে বেঁধে তার পুরুষাঙ্গ কেটে সেটিকে রান্না করে সেই ধর্ষককে জোর করে খায়িয়েছিলেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।

বিগত সালগুলোতে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, তিন বছরের মেয়ের ধর্ষককের পুরুষাঙ্গ কর্তন এবং হত্যা করার দায়ে ঐ ব্যক্তিকে আটক করার দাবিটি সত্য নয় বরং ২০১৭ সালে বিদেশি নাগরিকদের সাথে ঘটা সংঘর্ষের ঘটনায় তাকে আটক করা হয়েছিলো।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘Daily Mail’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে “Police fire stun grenades, rubber bullets and water cannons amid violent clashes between black South Africans and immigrants from the rest of the continent” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

এছাড়া প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘The Sun’ এর ওয়েবসাইটে একই দিনে অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারিতে “South African riot cops fire tear gas and arrest hundreds in Pretoria as massive anti-migrant protests turn violent” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন দুইটির বিস্তারিত অংশে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদেশি নাগরিকদের সাথে ঘটা সংঘর্ষ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এবং সংঘর্ষের সময়ে ধারণকৃত বেশ কয়েকটি ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ টঙ্গীতে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অভিযুক্ত ধর্ষকের নিহত হওয়ার ঘটনাটি দুই বছর পুরোনো
মূলত, ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের হামলা এবং লুটপাটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় বিদেশি নাগরিকেরা জড়ো হওয়ার পর অভিবাসী বিরোধী বিক্ষোভকারীরাও মুখোমুখি অবস্থান নিলে সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিদেশি নাগরিকদের সাথে ঘটা সংঘর্ষের ঘটনায় আটক হওয়া এই ব্যক্তির ছবিটিকেই ‘তার ৩ বছর বয়সী মেয়ের ধর্ষককে হত্যা করার পূর্বে ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে তা রান্না করে ঐ ধর্ষককে জোর করে খাইয়েছিলেন’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, একই দাবিটি ২০১৯ সালে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সে সময়ে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ‘Africa Check’ এবং ‘AFP’ বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সুতরাং, ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদেশি নাগরিকদের সাথে ঘটা সংঘর্ষে আটক হওয়া এক ব্যক্তির ছবিকে ‘তার ৩ বছর বয়সী মেয়ের ধর্ষককে হত্যা করার পূর্বে ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ কেটে তা রান্না করে ঐ ধর্ষককে জোর করে খাইয়েছিলেন’ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।