কাওয়ালি অনুষ্ঠানে ভাঙচুরের পুরোনো ভিডিওকে জামায়াত-শিবির কর্তৃক বিএনপির মঞ্চ ভাঙার দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমকে নিয়ে কুটুক্তি করায় বিএনপির মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে জামায়াত-শিবির দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে

এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি জামায়াত-শিবির কর্তৃক বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি গত জানুয়ারিতে ময়মনসিংহের একটি মাজারে কাওয়ালি অনুষ্ঠানে মাদ্রাসা ছাত্রদের হামলার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, দেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ৯ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল দেখা যায়।

এই সূত্র অনুসরণ করে দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে একই দিনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবি আলোচিত ভিডিওর সঙ্গে মিল দেখা যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৮ জানুয়ারি রাতে ময়মনসিংহে হজরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)-এর মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানান, বড় মসজিদ জামিয়া ফয়জুর রহমান (রহ.) মাদ্রাসার ছাত্ররা কাওয়ালির মঞ্চে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হলেও কেউ আহত হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

১১ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাজারের কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মাজারের অর্থসম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বাদী হয়ে ১,৫০০ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। অভিযোগের বিষয়ে জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাতে মাইক বাজিয়ে গানবাজনা করছিলেন মাজারের লোকজন। উচ্চ স্বরে গান বাজানোর কারণে ছাত্রদের পড়ায় সমস্যা হয়। এমন অবস্থায় ছাত্ররা গিয়ে গানের সাউন্ড কমাতে বলে। কিন্তু তা না করে গানের আসর থেকে উসকানিমূলক কথা বলায় ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে গিয়ে ভাঙচুর করে।

দেশের একাধিক মূলধারার গণমাধ্যমেও এই ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন (,) প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রতিবেদনগুলোতে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।

সুতরাং, গত জানুয়ারিতে ময়মনসিংহের একটি মাজারের কাওয়ালি অনুষ্ঠানে মাদ্রাসা ছাত্রদের হামলার ভিডিওকে গোলাম আযমকে নিয়ে কটূক্তির কারণে জামায়াত-শিবির কর্তৃক বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুরের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

Desh Tv: ময়মনসিংহে কাওয়ালী অনুষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর | Qawalli program | Mymensingh News | Desh TV

Ittefaq: ময়মনসিংহে কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, ভিডিও ভাইরাল 

Prothom Alo: ময়মনসিংহে কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা ও মাজারে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা    

আরও পড়ুন

spot_img