অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১১ নভেম্বর কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে আজারবাইজানে যান। পরবর্তীতে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে গত ১২ নভেম্বর Taza News নামের একটি চ্যানেল থেকে ‘ICC’র নির্দেশে/মামলায় আজারবাইজান থেকে গ্রেফতার হলেন ড. ইউনূস’ শীর্ষক শিরোনামে ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি ভিডিওটি এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে ৮ শতাধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ভিডিওটির মন্তব্যঘর ঘুরে অধিকাংশ নেটিজেনকে উক্ত দাবির পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আইসিসির নির্দেশে বা মামলায় আজারবাইজান থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রেফতার হননি বরং, নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যসূত্র ছাড়াই কিছু পুরোনো ভিডিও ফুটেজ যুক্ত করে তাতে চটকদার শিরোনাম ও থাম্বনেইল ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওর শুরুতে তিন জন সংবাদ উপস্থাপককে ড. ইউনূসের মামলার বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত ভিডিওগুলো (১, ২, ৩) সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এগুলো প্রায় পাঁচ বছর পূর্বের ভিডিও। ২০১৯ সালে গ্রামীণ কমিউনিকেশনস নামের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের চাকরীচ্যুত করার অভিযোগে দায়ের করা তিনটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।
পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো মামলা বা তাকে গ্রেফতারের কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতে (আইসিসি) ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া, এই দাবি প্রচার পরবর্তী সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে তার বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ছবি (১, ২) ও বক্তব্যের ভিডিও (১, ২) খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়াও, মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে আজ অনুষ্ঠিত কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে দেওয়া তার ভাষণ ও বিভিন্ন কার্যকমে অংশ নেওয়ার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
সুতারাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজান থেকে গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Chief Adviser GOB: Fecebook Page
- Rumor Scanner’s Own Analysis