চুমুতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে শীর্ষক মন্তব্য করেননি জামায়াতের আমির, কালের কণ্ঠের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড

সম্প্রতি, “চুমু খাওয়া দোষের কিছু না চুমু খেলে মন ভালো থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।” শীর্ষক মন্তব্যটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের দাবিতে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

কালের কণ্ঠের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “চুমু খাওয়া দোষের কিছু না চুমু খেলে মন ভালো থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।” শীর্ষক কোনো মন্তব্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান করেননি এবং কালের কণ্ঠও এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি বরং, ভিন্ন প্রেক্ষিতে কালের কণ্ঠের প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে কালের কণ্ঠর লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০১ এপ্রিল ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে।

এই সূত্রে অনুসন্ধান করে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে এসংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে গত ০১ এপ্রিল “যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল সাড়ে ১২ বছর। কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগও দেয়নি, সাক্ষ্যও দেয়নি।” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ব্যতিত বাকি সব উপাদানের মিল রয়েছে।

Photocard Comparison By Rumor Scanner 

ফটোকার্ডটিতে থাকা শিরোনামটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।  

কালের কণ্ঠের মূল ফটোকার্ড সম্বলিত এ সংক্রান্ত পোস্টের কমেন্টে থাকা সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০১ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জন্মস্থানের একটা মায়া-ভালোবাসা আছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর আপনাদের সামনে ২৪ বছর পর কথা বলার সুযোগ হয়েছে। কুলাউড়ার মানুষ যেভাবে চেনে অন্য কেউ সেভাবে চেনে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি কি যুদ্ধাপরাধী? না; অথচ আমার ওপর যুদ্ধাপরাধের মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল সাড়ে ১২ বছর। সাড়ে ১২ বছরের ছেলে যুদ্ধের সময়ে মানুষ খুন করতে পারে—এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা? তা-ও চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগও দেয়নি, সাক্ষ্যও দেয়নি। হিন্দু ভাইয়েরাও তাতে রাজি হয়নি। আমি সেই সময় জামায়াতে ইসলামীও করতাম না। আমি অন্য একটা সংগঠন করতাম। যেটা বলতে এখন লজ্জা হয়।’

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “চুমু খাওয়া দোষের কিছু না চুমু খেলে মন ভালো থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।” শীর্ষক শিরোনামে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img