সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সহ-সমন্বয়ক জড়িত – পুলিশের দাবি” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদমাধ্যম সময়ের কন্ঠস্বর এর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সহ-সমন্বয়ক জড়িত – পুলিশের দাবি” শীর্ষক শিরোনামে সময়ের কন্ঠস্বর কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সময়ের কন্ঠস্বর এর ফটোকার্ড সম্পাদনা করে ভুয়া দাবি সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এতে সময়ের কন্ঠস্বরের নাম, ভোরের ডাক’র লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে সময়ের কন্ঠস্বরের ফেসবুক পেজে প্রচারিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও সময়ের কন্ঠস্বরের ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে, সময়ের কন্ঠস্বরের ফেসবুক পেজে পর্যবেক্ষণ করে গত ২৬ ডিসেম্বর ‘মধ্যরাতে সচিবালয়ের আ’গুন নিয়ন্ত্রনে ১৯ ইউনিট, নি’হত ১’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ছবি ও গ্রাফিক্যাল ডিজাইনের সাথে এর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ‘মধ্যরাতে সচিবালয়ের আ’গুন নিয়ন্ত্রনে ১৯ ইউনিট, নি’হত ১’ শীর্ষক বাক্যের পরিবর্তে ‘সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সহ-সমন্বয়ক জড়িত – পুলিশের দাবি’ শীর্ষক বাক্য লেখা হয়েছে। লোগো এবং তারিখও পরিবর্তন করা হয়েছে।

অর্থাৎ, সময়ের কন্ঠস্বরের এই ফটোকার্ড সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
পাশাপাশি, অধিকতর অনুসন্ধানে ভোরের ডাক নামে একটি ভুঁইফোড় ব্লগস্পট ওয়েবসাইট পাওয়া যায়। যেখানে “সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন, পুলিশের দাবি ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক” শীর্ষক আর্টিকেল পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে যেটির কোনো সত্যতা খুজে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সচিবালয়ে আগুনের কারণ বৈদ্যুতিক ‘লুজ কানেকশন’। ভবনটির ছয় তলার মাঝামাঝি সিঁড়ির কাছে এটি শুরু হয়। সচিবালয়ের ভেতর সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও ২৬ ডিসেম্বর রাত ১.৩৬ মিনিটে একটি বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে ধীরে ধীরে আগুনের বিষয়টি ধরা পড়েছে।
সুতরাং, “সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সহ-সমন্বয়ক জড়িত – পুলিশের দাবি” শীর্ষক শিরোনামে সময়ের কন্ঠস্বর এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
- Somoyer Kanthosor – Facebook Post