সম্প্রতি “ঢাবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রী।” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চালুর ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসির উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বরং শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এটি ভুলভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে চলতি মাসের ২০ তারিখ “ভর্তিতে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। সারা বিশ্ব যখন সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে সবকিছুতে, যখন জীবনব্যাপী শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে, তখন সব জায়গায় দেয়াল তোলা হচ্ছে কেন? কেন বলা হচ্ছে, এই বয়সের পর আর ভর্তি হতে পারবে না? কেন বলা হচ্ছে, একবারের পর আর ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না?”
অর্থ্যাৎ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি চান, ভর্তিতে বয়স ও সময়ের এই বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়া হোক।
এছাড়া অনলাইন গণমাধ্যম The Daily Campus এ ২২ জুলাই “‘সেকেন্ড টাইম’ নিয়ে যা বললেন ঢাবি উপাচার্য” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আরও একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেকেন্ড টাইম নিয়ে আগের সিদ্ধান্তেই অনড় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে ঢাবির নিজেদের একটি পদ্ধতি রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেক চিন্তাভাবনা করে সেকেন্ড টাইম ভর্তির সুযোগ বন্ধ করেছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যে সিদ্ধান্ত ছিল সেটিই বহাল আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এভাবেই শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে।
পরবর্তীতে এই বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, এটা আমরা করতে পারব না। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করেছে, তারা দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দিবে না। এখন এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি বিবেচনা করবে তা আমরা ভবিষ্যতে দেখবো। এসময় তিনিও শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যকে উদ্ধৃত করেন।
মূলত, গত ২০ জুলাই (বুধবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দেশের উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশনবিষয়ক সম্মেলন এবং অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ভর্তিতে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে দাবি করা হচ্ছে যে, ঢাবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রী।
সুতরাং, ঢাবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে ইউজিসি এবং শিক্ষামন্ত্রী শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
Daily Prothom Alo: ভর্তিতে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চান শিক্ষামন্ত্রী
The Daily Campus: ‘সেকেন্ড টাইম’ নিয়ে যা বললেন ঢাবি উপাচার্য