“আমার জীবনের সেরা ১০ টি লজ্জা : ড. মাহফুজুর রহমান” শিরোনামের একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিগত কয়েক বছর ধরে প্রচার হয়ে আসছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
মূলধারার সংবাদমাধ্যম পূর্ব পশ্চিম বিডি (আর্কাইভ) এবং আমাদের সময় (আর্কাইভ) ভাইরাল পোস্টটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘আমার জীবনের সেরা ১০ টি লজ্জা’ শিরোনামে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া লেখাটির লেখক ড. মাহফুজুর রহমান নয় বরং লেখাটি লিখেছেন বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ ইমন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, Rtn MahammadAli Abir নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট লেখক হিসেবে ড. মাহফুজুর রহমানের নাম উল্লেখ করে ফেসবুকে আলোচিত পোস্টটি (আর্কাইভ) প্রকাশ করা হয়। একই দিন জাতীয় দৈনিক পূর্ব পশ্চিম বিডি‘র অনলাইন সংস্করণে সে সময়কার প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনের বরাত দিয়ে ড. মাহফুজুর রহমানকে লেখক দাবি করে লেখাটি প্রকাশিত হয়৷ ঐদিন আরেক জাতীয় দৈনিক আমাদের সময়’ও একইভাবে লেখাটি প্রকাশ করে। তবে পত্রিকাটি তাদের প্রকাশিত লেখার শুরুতে ড. মাহফুজুর রহমানের নাম লেখক হিসেবে উল্লেখ করলেও লেখার শেষে ‘লেখাটি সাব্বির আহমেদ ইমনের ফেসবুক থেকে নেয়া ‘ বলে উল্লেখ করে। ১১ আগস্টের পর থেকেই কপি-পেস্টের মাধ্যমে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিয়মিত প্রচারিত হয়ে আসছে।
অনুসন্ধানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী Sabbir Ahmed Emon নামক একটি ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৮ সালের ২ মার্চ ‘জীবনে পাওয়া দশ টি সেরা লজ্জা‘ (আর্কাইভ) শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটির সাথে এই পোস্টটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
সে বছরেরই ১১ আগস্ট জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একই লেখক অর্থাৎ সাব্বির আহমেদ ইমনের নাম লেখক হিসেবে উল্লেখ করে একই লেখাটি প্রকাশিত হয়।
সম্প্রতি ফেসবুকে কপি পেস্ট হয়ে লেখাটি পুনরায় ছড়িয়ে পড়ায় গত ১৯ জুলাই এ ব্যাপারে ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট (আর্কাইভ) দেন লেখাটির মূল লেখক সাব্বির আহমেদ ইমন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ” এই লেখা টা আমার ২০১৭ সালের। ২০১৭ তে আমার বুয়েটের একটা গ্রুপে পোস্ট করেছিলাম আর ২০১৮ তে আমার ওয়ালে পোস্ট করেছিলাম।”
তিনি আরো বলেন, “মাথা মোটা এক শিল্পপতির কিছু চ্যালা চামুণ্ডারা আমার লেখা টা সেই মাথা মোটা কার্টুন মার্কা শিল্পপতির নামে চালিয়ে দিলো। এটা নিয়ে আমি প্রতিবাদ মূলক লাইভ ও করেছিলাম। লাভ হয় নি। “
মূলত, ২০১৭ সালের ২৬ শে জুলাই জনাব সাব্বির আহমেদ ইমন বুয়েটের একটি গ্রুপে এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২ মার্চ ‘জীবনে পাওয়া দশটি সেরা লজ্জা’ শিরোনামে উক্ত লেখাটি তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেন। সে সময়ে উক্ত লেখাটি দৈনিক কালেরকন্ঠতেও তার নামে প্রকাশিত হয়েছিলো। তবে পরবর্তীতে এই লেখাটি বিভিন্ন সময়ে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান এর লেখা বা তার জীবনের গল্প দাবি করে ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে
সুতরাং, ‘জীবনে পাওয়া দশ টি সেরা লজ্জা’ শিরোনামের ফেসবুক পোস্টটি ড. মাহফুজুর রহমানের লেখা দাবিতে যে তথ্যটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।