অন্তত গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের কথিত একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওতে পুতুলের কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, “আমি শুনেছি তারেক জিয়া দেশে আসছেন। আমিও খুব শীঘ্রই দেশে ফিরে আসছি। আমি মানুষের পাশে দাঁড়াবো। তারপর খেলা শুরু হবে।”

একই ভিডিও টিকটকে দেখুন এখানে। এই ভিডিওটিও দেখা হয়েছে অন্তত এক লক্ষাধিক বার।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহারে ভুয়া ভিডিওটি প্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক কোনো ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টেও এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওটির উপাদানগুলোতে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
পুতুলের কথা বলার সময় তার মুখের মুভমেন্টসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোয় অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।
তাছাড়া, রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত পুতুলের ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে এবং প্রাপ্ত ছবিতে পুতুলকে একই পোশাকে, একই স্থানে এবং একই ভঙ্গিতে বসে থাকতে দেখা যায়।
অর্থাৎ, অন্তত ২০২২ সাল থেকে অনলাইনে থাকা একটি ছবি ব্যবহার করে ডিপফেক প্রযুক্তিতে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।
সুতরাং, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Bangla Tribune: Saima Wazed: Focus on quality education, dropouts
- Rumor Scanner’s own analysis