গত ০৫ সেপ্টেম্বর থেকে ‘এই মুহুর্তে গভীর রাতে কক্সবাজার হোটেলে গোপালগঞ্জ ছাত্রলীগের সভাপতি অবস্থান করছে,এজন্যই ট্যুরিস্ট পুলিশের হোটেলে ব্যাপক অভিযান চলছে।…’ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে গোপালগঞ্জ ছাত্রলীগ সভাপতির অবস্থানের কারণে কক্সবাজারের কোনো হোটেলে ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযানের ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, সম্প্রতি কক্সবাজারে পর্যটকদের লক্ষ্য করে সংঘটিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজারের কটেজ জোনে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ অভিযানের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে EidgahNews.Com – ঈদগাঁও নিউজ নামক ফেসবুক পেজে গত ০৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

ভিডিওটি ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গত ০৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১২টার দিকে পৌর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি আবাসিক কটেজ ও হোটেলে তল্লাশি চালায় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকদের লক্ষ্য করে সংঘটিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত এই বিশেষ অভিযানে অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ তরুণ-তরুণীকে আটক করা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, সম্প্রতি কটেজ জোন এলাকায় ছিনতাই, হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি পর্যটকদের প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারকে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ রাখতে অনৈতিক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কটেজ জোন অপরাধমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত অভিযান চলবে। আটকদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, কটেজ জোনে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পর্যটকদের লক্ষ্য করে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এতে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক ওই এলাকায় যাওয়া এড়িয়ে চলতেন। ট্যুরিস্ট পুলিশের সাম্প্রতিক এই অভিযানকে তাই স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২) প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই তথ্য জানা যায়।
এসব প্রতিবেদনে কক্সবাজারের হোটেলে গোপালগঞ্জ ছাত্রলীগের সভাপতির অবস্থান করা কিংবা এ কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযান সংক্রান্ত কোনো তথ্যের উল্লেখ নেই।
সুতরাং, কক্সবাজারের হোটেলে গোপালগঞ্জ ছাত্রলীগের সভাপতির অবস্থান করার কারণে হোটেলে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অভিযানের দাবিটি মিথ্যা৷
তথ্যসূত্র
- EidgahNews.Com – ঈদগাঁও নিউজ – Facebook Post
- Dhaka Post – কক্সবাজারে কটেজ জোনে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, অভিযানে আটক ১৩
- কালবেলা – হোটেলে গোপন সুড়ঙ্গ, ১৪ তরুণ-তরুণী ধরা