বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং প্রাণীদের অনুপস্থিতি সম্পর্কে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো মিথ্যা 

বাল্ট্রা প্রশান্ত মহাসাগরের গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট দ্বীপ। এই দ্বীপকে রহস্যময় দাবি করে ইন্টারনেটে বেশ কিছু তথ্য প্রচলিত রয়েছে। দাবি করা হয়, “বাল্ট্রা দ্বীপ এমন এক রহস্যময় জায়গা, যেখানে নাবিক ও অভিযাত্রীদের আচরণ অস্বাভাবিক হয়ে যায় এবং কম্পাস অনিয়মিত দিকনির্দেশ করে অথবা স্থির হয়ে যায়। এ দ্বীপে পা দিয়ে মানুষের মনে এক অদ্ভুত হালকা অনুভূতি জাগে, যা দ্বীপ ছাড়ার কিছুদিন পর নিজে থেকেই স্বাভাবিক হয়ে যায়। বাল্ট্রায় কোনো গাছ ও প্রাণীর অস্তিত্ব নেই, এমনকি পাখিরাও এর কাছে আসা এড়িয়ে চলে। চারপাশে বৃষ্টি হলেও দ্বীপের ভেতরে একফোটা বৃষ্টি পড়ে না।”

সম্প্রতি উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন বাংলানিউজ২৪

বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে একই দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন বায়ান্ন টিভি (২০২৩), আমার সংবাদ (২০১৫), স্টার সংবাদ (২০২৩), অধিকার (২০২০), জাগোনিউজ২৪ (২০২০), ঢাকা মেইল (২০২২), নিউজজি২৪ (২০২৩), আলোকিত বাংলাদেশ (২০২২), নয়া শতাব্দী (২০২৩), দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস (২০২৩), অড বাংলা (২০২০), যমুনা টিভি (২০২০), ডেইলি বাংলাদেশ (২০২২), সানবিডি২৪ (২০১৬), দৈনিক আজাদী (২০২২), বাংলাদেশ মনিটর (২০২২), ইত্তেফাক (২০২২), সময় টিভি (২০২২), দি ঢাকা টাইমস (২০১৫), নয়া দিগন্ত (২০২২), বাংলাদেশ বুলেটিন (২০২২), ডিএমপি নিউজ (২০২১)।

একই দাবিতে ওপার বাংলার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন দ্য ওয়াল।  

একই দাবির উল্লেখ করে বাংলাদেশের ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুলের ওয়েবসাইটে একটি ব্লগ প্রকাশিত হয়।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অনলাইন নিউজ পোর্টালেও একই দাবিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানের জানা যায়, বাল্ট্রা দ্বীপে উদ্ভিদ ও প্রাণীর অস্তিত্ব নেই এবং সেখানে বৃষ্টিপাত হয় না বলে ইন্টারনেটে ছড়ানো দাবিগুলো মিথ্যা। বাস্তবে বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টিপাত হয় এবং সেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে।

বাল্ট্রা দ্বীপের অবস্থান

বিশ্বস্ত ইংরেজি বিশ্বকোষ ব্রিটানিকা থেকে জানা যায়, বাল্ট্রা গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্ভুক্ত একটি ছোট দ্বীপ। এটি ইকুয়েডর থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব অংশে অবস্থিত। এই দ্বীপের আয়তন প্রায় ২১ বর্গ কিলোমিটার। এটি একসময় সান্তা ক্রুজ দ্বীপের একটি অংশ ছিল কিন্তু ভৌগোলিক পরিবর্তনের ফলে সান্তা ক্রুজ থেকে আলাদা হয়ে একটি নতুন স্বতন্ত্র দ্বীপে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইকুয়েডর সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে এই দ্বীপে একটি বিমান ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেয়, যা ১৯৪৬ সালে বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটনের বৃদ্ধির সাথে সাথে ইকুয়েডর সরকার বিমান ঘাঁটিটি বিমানবন্দরে রূপান্তরিত করে, যা বর্তমানে গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে পর্যটকদের জন্য প্রধান প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করছে।

বাল্ট্রা দ্বীপে কি বৃষ্টি হয় না?

বাল্ট্রা দ্বীপ সম্পর্কে প্রচলিত দাবিগুলোর একটি হলো এই দ্বীপে বৃষ্টির হয় না, দ্বীপটির চারপাশে প্রচুর বৃষ্টি হলেও এর ভেতরে কোন বৃষ্টির ফোটা পড়ে না। এই দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

কি–ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিজ্ঞান বিষয়ক নিউজ ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্স এ পৃথিবীর ১০টি শুষ্ক স্থানের তালিকা পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে এই শুষ্ক স্থানগুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে, এসব অঞ্চলে  বৃষ্টিপাত অত্যন্ত বিরল একটি ঘটনা এবং কিছু ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। এসব শুষ্ক আবহাওয়ায়  কিছু উৎপাদন করা খুবই কঠিন। অবিরাম বাষ্পীকরণ এবং প্রস্বেদনের কারণে গাছপালা বা মানুষের ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট পানি থাকে না। এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা ১০টি স্থানের মধ্যে বাল্ট্রা আইল্যান্ডের নাম নেই।

আমেরিকা ভিত্তিক স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ডিসকভারির ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে শুষ্ক স্থান হলো চিলিতে অবস্থিত আতাকামা মরুভূমি। একই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার ওয়েবসাইট থেকেও পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, বিশ্বস্ত সূত্রগুলোতে পাওয়া শুষ্ক স্থান সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বাল্ট্রা দ্বীপের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 
দ্বীপটিতে বৃষ্টিপাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে ১৯৮০ সালের এপ্রিলে অর্নিথোলজি বিষয়ক অন্যতম প্রধান জার্নাল “The Auk” এ প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়। গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন এবং এর প্রভাব যেভাবে ডারউইনের ফিঞ্চ ( গ্যালাপাগোস ফিঞ্চ) পাখিদের জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করে তার ওপর পিটার আর. গ্রান্ট ও পিটার টি. বোগের এই গবেষণা থেকে জানা যায়, বালট্রার বার্ষিক বৃষ্টিপাত গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য দ্বীপের তুলনায় অনেক কম। গবেষণাকালীন ১৯৬৭ ও ১৯৭০ সালে দ্বীপটিতে ১ মিলিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইট নট ইয়োর অ্যাভারেজ আমেরিকায় ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়। এই ব্লগে আমেরিকান পর্যটন পরামর্শদাতা অ্যাঞ্জি ড্রেক তার গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানান। ব্লগটিতে অ্যাঞ্জি উল্লেখ করেন, তারা বৃষ্টির মৌসুমে  গ্যালাপাগোস ভ্রমণে গিয়েছিলেন এবং বাল্ট্রা দ্বীপে পৌঁছানোর সময় হালকা বৃষ্টি হয়েছিল।

ভ্রমণ বিষয়ক আরেকটি ওয়েবসাইট হয়্যার অ্যান্ড হোয়েন থেকে জানা যায়, বাল্ট্রা দ্বীপে বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০০ মিলিমিটার। এই দ্বীপে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ঘটে, যার পরিমাণ ১১৩ মিলিমিটার। অন্যদিকে, অক্টোবর মাসে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হয় যা মাত্র ৩ মিলিমিটার।

এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বানুমান সংক্রান্ত একাধিক ওয়েবসাইটেও বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টিপাতের তথ্য পাওয়া যায়।

সুতরাং, বাল্ট্রা দ্বীপে বৃষ্টিপাত হয় না এমন দাবি অসত্য।

বাল্ট্রা দ্বীপে কি কম্পাস অনিয়মিত দিকনির্দেশ দেয়?

গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ বিষয়ক মার্কিন অলাভজনক সংস্থা গ্যালাপাগোস কনজারভেন্সির ওয়েবসাইটে বাল্ট্রা দ্বীপ সম্পর্কিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ইকুয়েডরের মূলভূমি ও গ্যালাপাগোসের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী দুই বিমানবন্দরের একটি বাল্ট্রা দ্বীপে অবস্থিত। এই দ্বীপটি গ্যালাপাগোসে পা রাখা অধিকাংশ পর্যটকের জন্য প্রবেশ দ্বার হিসেবে কাজ করে। বাল্ট্রা এয়ারপোর্ট এই অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর। প্রতি বছর প্রায় ২,০০০ বাণিজ্যিক ফ্লাইট  গ্যালাপাগোসে আগমন করে, এর মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিমান বাল্ট্রায় অবতরণ করে।

পরবর্তীতে, ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে বাল্ট্রা দ্বীপে অবস্থিত সিমোর বিমানবন্দরে বিমান অবতরণের কয়েকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায় (,,)। এই ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে কম্পাসের অনিয়মিত দিকনির্দেশনা দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিমানগুলোর পাইলটকেও এই বিষয়ে কিছু বলতে শোনা যায়নি। বরং, খুব স্বাভাবিকভাবেই বিমানগুলোকে অবতরণ করতে দেখা যায়।

তাছাড়া, বাল্ট্রা দ্বীপে যদি কম্পাস অনিয়মিত দিকনির্দেশ দিত, তবে এই দ্বীপের এয়ারপোর্টে প্রতি বছর এত সংখ্যক বাণিজ্যিক ফ্লাইটের অবতরণ এবং নিরাপদ বিমান চলাচল ব্যাহত হতো। এমনকি এখানে একটি সক্রিয় বিমানবন্দরের অস্তিত্ব রাখাও সম্ভব হতো না। বিশ্বব্যাপী বিমান নিরাপত্তা ও নেভিগেশন সম্পর্কিত বিশ্বস্ত সূত্রগুলোতেও এই অস্বাভাবিকতার বিবরণ পাওয়া যেত। কিন্তু এমন কোনো তথ্য বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বাল্ট্রা দ্বীপে নাবিক বা অভিযাত্রীদের সঙ্গে থাকা কম্পাসের আচরণ বদলে যাওয়ার দাবিও অসত্য।

বাল্ট্রা দ্বীপে কি গাছ ও প্রাণীর অস্তিত্ব নেই?

উল্লিখিত গ্যালাপাগোস কনজারভেন্সির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, বাল্ট্রা একটি শুষ্ক অঞ্চল এবং এখানকার উদ্ভিদজগৎ প্রধানত লবণ সহিষ্ণু উদ্ভিদ, কাঁটাযুক্ত নাশপাতি ক্যাকটাস এবং পালো সান্টো গাছে ভরপুর। এখানে বহু পাখি লক্ষ্য করা যায়, যার মধ্যে বুবি এবং ফ্রিগেট বার্ড অন্যতম।

ইকুয়েডর ভিত্তিক ভ্রমণ সংস্থা হ্যাপি গ্রিংগো ট্রাভেলের ওয়েবসাইটের বাল্ট্রা দ্বীপ ভ্রমণ বিষয়ক একটি ব্লগেও একই তথ্য দেওয়া হয়েছে। এই ব্লগে বাল্ট্রা দ্বীপের বন্যপ্রাণী সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যায়। ব্লগে বলা হয়েছে, বাল্ট্রা দ্বীপের শুষ্ক ইকোসিস্টেমে বিশেষভাবে বসবাস করে এমন একটি প্রাণী হল  গ্যালাপাগোস ভূমি ইগুয়ানা। এরা বড় ক্যাকটাস গাছের নিচে বাস করে এবং তাদের প্রিয় খাবার হল কাঁটাযুক্ত নাশপাতি ক্যাকটাস। ১৯৩০-এর দশকে বাল্ট্রা দ্বীপ থেকে কিছু ভূমি ইগুয়ানাকে নিকটবর্তী নর্থ সেইমোর দ্বীপে সরিয়ে নেওয়া হয়, যেখানে ইগুয়ানাদের জনসংখ্যা সংকটাপন্ন ছিল। কয়েক বছর পর, ১৯৫৪ সালে বাল্ট্রায় ইগুয়ানার প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরে, নর্থ সেইমোর থেকে বাল্ট্রায় ইগুয়ানার জনসংখ্যাকে পুনর্বাসন করা হয় এবং আজ বাল্ট্রা দ্বীপে ৪০০-এরও বেশি ভূমি ইগুয়ানা ঘুরে বেড়ায়। এছাড়া বাল্ট্রার বিমানবন্দরে আগত পর্যটকরা গ্যালাপাগোস ফিঞ্চ পাখিদেরও সাক্ষাৎ পায়। 

Screenshot: Happy Gringo Travel. 

২০১২ সালে কানাডা ভিত্তিক ভ্রমণ সংস্থা সিএনএইচ ট্যুরসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মানুষের কার্যকলাপ ও বিদেশী প্রাণীর অনুপ্রবেশে বাল্ট্রা দ্বীপের ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৯০-এর দশকে গ্যালাপাগোস ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস এবং চার্লস ডারউইন রিসার্চ স্টেশনের উদ্যোগে দ্বীপটির ইকোসিস্টেম পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়।  ২০১২ সালে বাল্ট্রা দ্বীপে নীল পায়ের বুবি পাখির নতুন একটি বসতির সন্ধান মিলে, যা ইকোসিস্টেম পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দেয়।

উক্ত প্রতিবেদনের সূত্রে চার্লস ডারউইন ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন থেকে (,) বাল্ট্রা দ্বীপের ইকোসিস্টেম পুনর্বাসনে সংস্থাটির নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে চার্লস ডারউইন ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করলে সংস্থাটি রিউমর স্ক্যানার টিমকে নিশ্চিত করে বাল্ট্রা দ্বীপে উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী রয়েছে।

এছাড়া গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের ক্রুজ বুকিং সংক্রান্ত প্ল্যাটফর্ম গ্যালাপাট্যুরসের ওয়েবসাইটে বাল্ট্রা দ্বীপ ভ্রমণের সময় পর্যটকরা যেসব প্রাণী দর্শনের আশা করতে পারেন তার একটি তালিকা পাওয়া যায়।

Screenshot: Galapatours.

তাছাড়া ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে, একাধিক স্টক ফটো ওয়েবসাইটে বাল্ট্রা দ্বীপে তোলা বিভিন্ন গাছ ও প্রাণীর ছবি খুঁজে পাওয়া যায় (,,,,)।

অর্থাৎ, বাল্ট্রা দ্বীপে উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব নেই এমন দাবিটিও অসত্য।

মূলত, বাল্ট্রা দ্বীপ দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি ছোট দ্বীপ। বেশ কিছু বছর ধরে এই দ্বীপকে রহস্যময় দাবি করে ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য প্রচার করা হয়। ইন্টারনেটে প্রচারিত দাবিগুলো অনুযায়ী, বাল্ট্রা দ্বীপে নাবিক ও অভিযাত্রীরা অস্বাভাবিক আচরণ করে, কম্পাস অনিয়মিত দিকনির্দেশনা দেয়, কোনো উদ্ভিদ বা প্রাণীর অস্তিত্ব নেই এবং দ্বীপে বৃষ্টি পড়ে না। তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের গভীর অনুসন্ধানে এই দাবিগুলোর অসত্য প্রমাণিত হয়েছে। বাস্তবে, বাল্ট্রা দ্বীপে জনজীবন রয়েছে, এখানে বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ ও প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে এবং দ্বীপটিতে বৃষ্টিপাতও ঘটে। এমনকি গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত দুটি প্রধান বিমানবন্দরের একটি এই দ্বীপে অবস্থিত।

সুতরাং, বাল্ট্রা দ্বীপকে রহস্যময় দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img