ভারতের ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশের একটি ইনস্টিটিউটে মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলায় এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করেছেন মেয়েটির বাবা দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘কন্যার সাথে কথা বলার সময়, বাবা ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে সিসিটিভিতে কারাবন্দী !!ঢাকা ইনস্টিটিউটে একটি ছুরি দিয়ে একজন ছাত্রকে আক্রমণ করা হয়েছিল। অভিযুক্ত মেয়েটির বাবা হয়ে উঠলেন, যিনি তার মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য ছেলেটিকে লক্ষ্যবস্তু করেছিলেন। ঘটনাটি ইনস্টিটিউটের কাউন্সেলিং রুমে হয়েছিল, যেখানে শিক্ষকের উপস্থিতিতে বাবা ছেলেটিকে আক্রমণ করেছিলেন। আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি এবং পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের এই ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং, এটি ভারতের গুজরাটের ঘটনা। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘indianewshd’ নামক ইনস্টগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বর্ণনা থেকে জানা যায়, ভারতের গুজরাটের ওএজে ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে ইনস্টিটিউটের কাউন্সেলিং রুমে ১৭ বছর বয়সী এক ছেলেকে বারবার ছুরিকাঘাত করে এক ব্যক্তি। ১০ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত এই হামলার কারণ হিসেবে জানা গেছে , অভিযুক্ত ব্যক্তি ছেলেটির সঙ্গে তার মেয়ের ফোনে কথা বলার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। হামলার সময় অভিযুক্তের মেয়ে ও একজন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ইন্ডিয়া টুডের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পুলিশ জানিয়েছে, গুজরাটের ভাবনগরের ওএজে ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে এক যুবকের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঘটনাটি ইনস্টিটিউটের কাউন্সেলিং রুমে ঘটে, যেখানে কার্তিক নামের ছেলেটিকে শিক্ষকের উপস্থিতিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। হামলাকারীর পরিচয় জগদীশ রাচাদ হিসেবে জানা গেছে, যিনি কার্তিককে তার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলার কারণে আক্রমণ করেছিলেন।

পুলিশের মতে, যখন ছেলেটিকে শিক্ষক কাউন্সেলিংয়ের জন্য রুমে ডেকে পাঠান, তখন জগদীশ রাচাদ তার কাছে যান এবং তাকে তিরস্কার করেন, তার মেয়েকে যেন কথা না বলে সতর্ক করেন। তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই, রাচাদ তার মেজাজ হারান এবং যুবকটিকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন।

সুতরাং, ভারতের গুজরাটে এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনাকে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img