বিগত মাসগুলোতে ‘চীনে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়েছিলো তাদের বাবা তাদের জন্যে কতোটা কষ্ট আর পরিশ্রম করে।‘ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে আসছে।

ফেসবুকে চীনের দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে।
আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে ৷

জাপানের স্কুল দাবিতে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাপানে বা চীনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বাবাদের পরিশ্রম দেখানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সঠিক নয় বরং ভিডিওটি প্রযুক্তির সহায়তায় একাধিক ভিডিও যুক্ত করার মাধ্যমে তৈরি করা৷
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে 真相記 @zhenxj নামের একটি চ্যানেলে চলতি বছরের ২৬ মে “得知老师因病去世 全班学生痛哭 郭老师一路走好 愿天堂没有病痛 (Knowing that the teacher passed away due to illness, the whole class cried bitterly. Teacher Guo is going well all the way. May there be no illness in heaven, চীনা ভাষা থেকে অনুদিত)” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

চীনা ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদের মাধ্যমে ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, চীনের লুইপানশু শহরের একটি স্কুলের ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের কান্নার সাম্প্রতিক দৃশ্য এটি। এক শিক্ষকের অসুস্থ হয়ে মারার যাওয়ার সংবাদ শুনে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমেই কান্নায় ভেঙে পড়ে।

এই ভিডিওটির সঙ্গে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের বাবাদের পরিশ্রম দেখানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একটি দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাবাদের পরিশ্রমের ভিডিও দাবিতে দেখানো দৃশ্যগুলো সম্পাদনার মাধ্যমে ক্লাসের বোর্ডে আলাদাভাবে স্থাপন করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইউটিউবেও বিভিন্ন দাবিতে এই ভিডিওগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে।

এছাড়া আরও বিস্তারিত অনুসন্ধানে চীন ও জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ও দেশগুলোর গণমাধ্যম থেকেও দেশগুলোর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যায়নি।
মূলত, চীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বাবাদের পরিশ্রম দেখানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওগুলো বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার একাধিক ধারণকৃত ভিডিওকে প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একই ভিডিওগুলো জাপানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবিতেও প্রচার হয়েছিল। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে চীন ও জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ও দেশগুলোর গণমাধ্যম থেকেও দেশগুলোর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে জানা যায়নি। বরং অনুসন্ধানে দেখা যায়, চীনের একটি স্কুলের ক্লাসরুমে শিক্ষকের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমেই কান্নার ভিডিওকেও এই ভিডিওগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান Factly ও আলোচিত বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে উল্লেখ করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সুতরাং, জাপানে বা চীনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বাবাদের পরিশ্রম দেখানোর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সঠিক নয়; এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- 真相記 @zhenxj_YouTube: 得知老师因病去世 全班学生痛哭 郭老师一路走好 愿天堂没有病痛
- Japan Education Ministry: https://www.mext.go.jp/en/policy/education/elsec/index.htm
- China Education Ministry: http://en.moe.gov.cn/about_MOE/departments/
- Factly: Edited video shared as the visuals of Japanese schools showing students the videos of their parents’ labour for their education
- залипательно_Youtube: Different Video