সম্প্রতি “গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে শ্রীলঙ্কায়। কিন্তু এর আতংকে আওয়ামী নেতাকর্মীদের জানে পানি নাই, একদম চম্মলক্ব চম্মলক্ব অবস্থা” শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন প্রতিবেদনের একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্রীলঙ্কায় অভ্যুত্থানের ঘটনার আতংকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের পালিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের আটকে দেওয়ার ছবি সম্বলিত প্রথম আলোর সংবাদটি সত্য নয় বরং প্রচারিত উক্ত স্ক্রিনশটটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করা।
কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মূলধারার দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ১২ জুলাই “পালাচ্ছিলেন গোতাবায়া, বিমানবন্দরে আটকে দিলেন অভিবাসন কর্মকর্তারা” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম কলম্বো গেজেটকে উদ্ধৃত করে প্রথম আলো জানায়, অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে আটকে দেন।
অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটির শিরোনামে আওয়ামী নেতাকর্মীদের কথা উল্লেখ করা হলেও ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছবি ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ ও কে এম নূরুল হুদার ছবি রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং এই সময় বিমানবন্দরে আটকে দেওয়ার মতো কোনো ঘটনার সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো গত ১২ জুলাই অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা তাকে আটকে দেওয়া প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনের একটি স্ক্রিনশট ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় এডিট করে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পালিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তারা আটকের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, শ্রীলঙ্কায় অভ্যুত্থানের ঘটনার আতংকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের পালিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তাদের আটকে দেওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং প্রচারিত স্ক্রিনশটটি ভুয়া।
তথ্যসূত্র
Daily Prothom Alo: পালাচ্ছিলেন গোতাবায়া, বিমানবন্দরে আটকে দিলেন অভিবাসন কর্মকর্তারা