সম্প্রতি, “প্রবাস থেকে বাড়িতে আসার পথে চাঁদাবাজদের হামলার শিকার হলেন ইয়া আল্লাহ কি শুরু হইলো দেশে” শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী উক্ত ভিডিওটি প্রচার করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি প্রবাস থেকে বাড়ি ফেরার পথে চাঁদাবাজদের হামলার শিকার হওয়া সংক্রান্ত বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়, বরং এটি ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার দৃশ্য।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ‘Mo.Of.Everything’ নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ০৭ জুলাই “A video of Kanwariyas attacking a Muslim family has gone viral on social media” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, গত ০৫ জুলাই ভগবান শিবের ভক্ত কাঁওয়ারিয়া তীর্থযাত্রীরা হরিদ্বার থেকে পবিত্র জল নিয়ে ফিরছিলেন। এসময় তারা একটি চলন্ত গাড়ি তাদের কাঁওয়ার (পবিত্র জল বহনের সাজানো কাঠামো) ভেঙে ফেলেছে অভিযোগ এনে এক মুসলিম পরিবারকে, নারী-শিশুসহ রাস্তায় তাড়া করে মারধর করেন ও গাড়ি ভাঙচুর করেন।
উল্লিখিত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে
এ বিষয়ে ভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ‘The Free Press Journal’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৬ জুলাইয়ে ‘Video: Kanwariyas Vandalise Car, Assault Muslim Family After Minor Accident In Uttarakhand’s Haridwar; FIR Registered’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, হরিদ্বারের মাঙ্গলৌরে কাঁওয়ার যাত্রার সময় একটি মুসলিম পরিবারের গাড়িকে ধাক্কার অভিযোগে কাঁওয়ারিয়ারা গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের, নারী-শিশুসহ, মারধর করে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ এফআইআর দায়ের করে এবং দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় বিষয়টি আপোষ হয়ে যায়।
অর্থাৎ, এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয়।
সুতরাং, ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার দৃশ্যকে বাংলাদেশে প্রবাস থেকে বাড়ি ফেরার পথে চাঁদাবাজদের হামলার শিকার হওয়ার দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।