ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় পর প্রকাশ্যে এসেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে সাদিক কায়েম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি হিসেবে দাবি করার পর এ নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সাদিকের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সরব উপস্থিতি ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে প্ল্যাটফর্মটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে এই ব্যক্তিকে দেখাও গেছে। এরই প্রেক্ষিতে এই প্লাটফর্মের দুই সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ারও শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে ইন্টারনেটে। ছবিতে কিছু ব্যক্তিকে স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে দুই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাদের আসিফ ও নাহিদ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
উক্ত ছবি সম্বলিত ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটিতে আসিফ বা নাহিদ কারো উপস্থিতিই ছিল না বরং ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ কর্মসূচির এই ছবিতে সম্পাদনার মাধ্যমে দুইজনের মুখমণ্ডল বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ভিন্ন দুই ব্যক্তির মুখমণ্ডলের উপর।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেসারেট নিউজের ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ০৫ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ইসমাইল ফেরদৌসের তোলা এই ছবিতে আসিফ বা নাহিদ কাউকেই দেখা যায়নি। এই দুইজনের স্থলে ছিল ভিন্ন ব্যক্তির ছবি।
ছবিটি শেয়ার করে গণমাধ্যমটি ক্যাপশনে জানায়, হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভকারীরা সেদিন ঢাকায় বিক্ষোভের সময় স্লোগান দেয়। তারই দৃশ্য এটি।
উল্লেখ্য, আসিফ এবং নাহিদ ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে একটি ছাত্রসংগঠনের সাথে জড়িত। গত বছরের শুরু থেকে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্বের সময় দল দুই ভাগ হয়ে পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নুরের অনুসারী হিসেবে পরিচিতদের একটি অংশ ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ গড়ে তোলেন। নাহিদ ইসলাম এই সংগঠনের সদস্য সচিব। আসিফ মাহমুদ সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক। গত ১৪ সেপ্টেম্বর গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সকল কমিটি ও কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
সুতরাং, ২০১৩ সালের ভিন্ন ঘটনার যে ছবি ব্যবহার করে আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের শিবির সংশ্লিষ্টতার দাবি করা হচ্ছে তা সম্পাদিত।
তথ্যসূত্র
- Deseret News: Violence in Bangladesh as Islamic activists demand anti-blasphemy law
- Rumor Scanner’s own analysis