গত ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়া নামক শহরতলীতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হেজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। হামলায় ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে শতাধিক মিসাইল ছোঁড়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে কোনও একটি শহরের একাধিক বিল্ডিংয়ে আগুন জ্বলার একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্য।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিল্ডিংয়ে আগুন জ্বলার এই ভিডিওটি ইরান কর্তৃক ইসরায়েলে হামলার কোনো ঘটনার নয়, বরং ভিডিওটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে এর রঙ, আগুনের গতিবিধি এবং আকৃতি অস্বাভাবিক বলে মনে হয়। তাছাড়া, গাড়ির ট্রাফিকের গতি, বিল্ডিংয়ের ছাদসহ কিছু অসঙ্গতিও লক্ষ্য করা যায়।
ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে digital.n0mad ইউজারনেমের একটি অ্যাকাউন্টে প্রায় ১ সপ্তাহ পূর্বে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়।
উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে তার বায়ো বা অ্যাবাউট সেকশনে “UNUSUAL AI ARTIST” লেখা দেখতে পাওয়া যায়৷ তাছাড়া, অ্যাকাউন্টটিতে এরকম আরো একাধিক আগুন এবং স্থাপনা পোড়ার ভিডিও পাওয়া যায়।
এছাড়া, উক্ত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত ভিডিওটি আসল মর্মে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অসংগতি দেখা দেওয়ায় ভিডিওটি যাচাই করার জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট হাইভ মডারেশনর সাহায্য নেওয়া হয়। ওয়েবসাইটির বিশ্লেষণে ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ বলে ফলাফল দিয়েছে।
সুতরাং, ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্য মর্মে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- digital.n0mad – Tik Tok Video
- Rumor Scanner’s own analysis