Home Blog Page 152

কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি সমকামিতার সমর্থক শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি’র একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “সমকামিতার সমর্থক কাফি”।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে সংযুক্ত ছবিতে কাফি’র হাতে এলজিবিটিকিউ+ প্রাইড পতাকার সদৃশ রঙের একটি টুপি দেখা যায় এবং উক্ত টুপিটির আলোকেই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি সমকামিতার সমর্থক নন। তিনি নানাসময়ে সমকামী বিরোধী ভিডিও বানিয়েছেন ও নিজেকে সমকামিতার বিপক্ষের একজন ব্যক্তি বলে দাবি করেছেন। এমনকি রিউমর স্ক্যানার টিমকেও তিনি এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তাছাড়া, প্রদর্শিত টুপিটির সাথেও সমকামিতা বা এলজিবিটিকিউ+ এর প্রাইড পতাকার রঙের পার্থক্য রয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া  যায়নি। পোস্টগুলোতে কেবলমাত্র কাফি’র হাতে থাকা টুপিটির রঙের উপর ভিত্তি করেই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। কাফি’র ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি গত ২৪ জানুয়ারি কাফি তার ফেসবুক পেজে “একা থাকার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে প্রিয়তমা।” শীর্ষক ক্যাপশনে পোস্ট করেছিলেন৷ উক্ত পোস্টটিতে কাফি সমকামিতার বিষয়ে কোনো উল্লেখ করেননি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে কাফি’র হাতে থাকা উক্ত টুপিটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, টুপিটিতে মূলত চারটি রঙ রয়েছে যা হলো কালো, লাল, হলুদ ও সবুজ৷ অপরদিকে ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো বোউল্ডার এর অন্তর্ভুক্তি ও সামাজিক পরিবর্তন কেন্দ্র এবং হেল্থ নামক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধ থেকে জানা যায়, প্রচলিত রেইনবো প্রাইড ফ্ল্যাগে সাধারণত ছয়টি রঙ থাকে। রঙগুলো হলো: লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, বেগুনি ও নীল বা বেগুনি নীল। 

Comparison: Rumor Scanner

অর্থাৎ, এলজিবিটিকিউ+ এর পতাকাতে কালো রঙ থাকে না কিন্তু কাফি’র হাতে থাকা টুপিতে কালো রঙ একাধিকবার দেখা যায়। এছাড়া, কাফি’র হাতে থাকা টুপিতে এলজিবিটিকিউ+ এর পতাকাতে থাকা কমলা, বেগুনি ও নীল রঙ দেখা যায়নি যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, কাফি’র হাতে থাকা টুপিটি এলজিবিটিকিউ+ এর সমর্থনে প্রচলিত কোনো টুপি নয়।

টুপিটির ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে টুপিটি অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে “Unisex Jamaica Reggae Cap Rasta Slinky Beanie Multi-Colour Striped Slouchy Baggie Beanie Skullies Gorro Rasta Hat” শীর্ষক নামে বিক্রি হতে দেখা যায়। পণ্যের নাম বা বিবরণীতে এটির সাথে সমকামিতার কোনো সম্পৃক্ততা উল্লেখ করতে দেখা যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি’র ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে তাকে নানা সময়ে সমকামিতার বিরুদ্ধে কথা বলতে বা ভিডিও বানাতে দেখা যায়। ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারিতে তার ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ভিডিওতে কাফি’কে বলতে শোনা যায় যে, সমকামী বা সমকামী সমর্থকদের চেয়ে কুকুর ভালো। 

তাছাড়া, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে গল্পে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে বলে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে অভিযোগ করেছিলেন তৎকালীন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। ২০২৪ সালের ১৯ জানুয়ারি ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে আসিফ মাহতাব বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি এই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। এরই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আসিফকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় চাকরিচ্যুত করেছিল বলে জানা যায়। সেসময়ও কাফি একটি ভিডিও তৈরি করে আসিফ মাহতাবকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়ে আসিফকে পদচ্যুত করার সিদ্ধান্তের জন্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা করেন। এছাড়াও, আরো নানাসময়ে তাকে সমকামিতা বা ট্রান্সজেন্ডারবিরোধী ভিডিও তৈরি করতে দেখা যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে টুপি হাতে কাফি’র উক্ত ছবিটি প্রচার করে তাকে সমকামী সমর্থক বলে প্রচার করা হলে তিনি তার ফেসবুক পেজে গত ২৫ জানুয়ারি একটি ভিডিও প্রচার করেন৷ ভিডিওটিতে তিনি সমকামী সমর্থক হওয়ার দাবিটি মিথ্যা বলে জানান।

এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম কাফি’র সাথে যোগাযোগ করলে কাফি জানান, “আমি একজন মুসলিম। সমর্থন করার বিষয়ই আসে না। বরং, আমি সমকামিতার বিপক্ষে। আমি এর বিপক্ষে ভিডিও ও বানিয়েছি।”

সুতরাং, কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি সমকামিতার সমর্থক শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার ভারত থেকে ভাষণ দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার 

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলের। সেদিন দেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভাষণ দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে তিনি পদত্যাগ করেননি বলে মন্তব্য করেছেন এমন দাবিও করা হয় পোস্টগুলোর শিরোনামে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

টিকটকে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। বরং, জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদানের একটি ভিডিওর সাথে ভারতের পুরোনো ও ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার দুটি ভিডিওর ক্লিপ যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে এতে আলোচিত ভিডিওটিতে শেখ হাসিনাকে, ‘তোমরা রাজাকার, তোমার বাবা রাজাকার এটাতো তোমরাই করেছ। চেয়েছিলাম অধিকার হয়েগেছি রাজাকার। আরে রাজাকার আমিতো তোমাদের বলিনাই, তোমরা নিজেরা স্লোগান দিয়ে তোমাদেরকে রাজাকার’ শীর্ষক কথাগুলো বলতে শোনা যায়। এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ফুটেজের পাশাপাশি দর্শকদের আরেকটি ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া শেখ হাসিনার বক্তৃতা দেওয়ার ভিডিওটি অনুসন্ধানে ইংরেজি জাতীয় দৈনিক The Daily Star এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভি ভবন পরিদর্শন করে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে উক্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনাকে একই বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। এছাড়াও উভয় ভিডিওতে তার পরিহিত শাড়ি, বুকে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি খচিত ব্যাজ এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের মিল রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, আলোচিত ভিডিওতে শেখ হাসিনার সামনে থাকা বিজেপির লোগো সম্বলিত মঞ্চের অবয়বটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বসানো হয়েছে। 

এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত বছর জুলাই মাসে দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার রামপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে আন্দোলনকারীদের আগুন দেওয়ার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। উক্ত ভিডিওটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে তার কথা বলার সময় ধারণ করা। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার ভারত থেকে ভাষণ দেওয়ার নয়।

ভিডিও যাচাই ২

আলোচিত ভিডিওতে থাকা নরেন্দ্র মোদির ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের গণমাধ্যম NDTV Profit এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৭ জুন WATCH: In Nitish Kumar’s Speech At NDA Meet, Reaffirmation For BJP & A Taunt For Congress শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে আলোচিত ভিডিওর নরেন্দ্র মোদির ফুটেজের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিডিওটি থেকে জানা যায়, এটি ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) সংসদীয় দলের বৈঠকের ভিডিও। যেখানে জোট দলগুলোকে নরেন্দ্র মোদিকে ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওটির সাথে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো সম্পর্ক নেই। 

ভিডিও যাচাই ৩

সর্বশেষ ভিডিওতে দেখতে পাওয়া আরেকটি ফুটেজ অনুসন্ধানে নরেন্দ্র মোদির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর LIVE: PM Modi inaugurates ITU World Telecommunication Standardization Assembly শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে উক্ত ভিডিওটি বেশ কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর বিভিন্ন ফুটেজের মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নয়াদিল্লিতে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন, ওয়ার্ল্ড টেলিকমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অ্যাসেম্বলি উদ্বোধন করার ভিডিও।

অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ যুক্ত করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভাষণ দিচ্ছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ইডেনের সমন্বয়ক ইতির ছবি দাবিতে ভারতীয় নারীর ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ইতি নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইডেন মহিলা কলেজের একজন সমন্বয়কের আপত্তিকর দৃশ্য দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো ইডেনের সমন্বয়ক ইতির নয় বরং ভারতীয় পর্ণসাইট থেকে ভিন্ন এক নারীর আপত্তিকর কিছু ছবি সংগ্রহ করে সেগুলোকে ইতির ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইডেন কলেজের ইতি নামের কোনো সমন্বয়ক আছে কিনা তার খোঁজ চালায় রিউমর স্ক্যানার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গত বছরের (২০২৪) ৩১ জুলাই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সংগঠনের ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সমন্বয়ক পরিষদের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের একটি সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকায় সমন্বয়ক হিসেবে তিলোত্তমা ইতি নামে ২০২০-২১ সেশনের একজন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ পাওয়া যায়।

Image: Facebook 

রিউমর স্ক্যানার ইতির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে বের করেছে। অ্যাকাউন্টে থাকা তার ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ছবিগুলোর মিল পাওয়া যায়নি।  

ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার দেখতে পায়, অন্তত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতীয় বিভিন্ন পর্ণসাইটে (সঙ্গত কারণে লিংক সংযুক্ত করা হয়নি)। এই ছবিগুলো অ্যালবাম আকারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ছবিতে উক্ত নারীর পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। 

সুতরাং, ভারতীয় পর্ণ সাইটে ভিন্ন নারীর আপত্তিকর ছবিকে ইডেন কলেজের সমন্বয়ক তিলোত্তমা ইতির ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

  • Abdul Hannan Masud: Facebook Post
  • Main Source: Hidden (adult purpose)

ভারতের কোচিং প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত প্রযুক্তির দৃশ্যকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যেখানে দেখা যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের আইডি কার্ড সদৃশ কোনো একটি বস্তু স্ক্যান করছেন৷ উক্ত ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “উপদেষ্টাদেরকে ধন্যবাদ এমন একটি প্রযুক্তি স্কুল-কলেজে দেওয়ার জন্য”। অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো স্কুল-কলেজে ধারণকৃত যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা স্কুল-কলেজে দিয়েছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি প্রায় ১৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে ধারণকৃত নয় বরং, ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” নামের একটি কোচিং সেন্টারে ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া  যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে “মেডিক্যাল ওয়াল্লাহ” নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কেবলমাত্র প্রচারিত পোস্টে উক্ত ভিডিওটি মিরর করে প্রচার করা হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইন্সটাগ্রাম পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “আয়াম ক্যারিয়ার ইন্সটিটিউট, ইন্দোর”। তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত স্ক্রিনেও এই নামটি প্রদর্শিত হতে লক্ষ্য করা যায়।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” এর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায় যা থেকে জানা যায় যে, এটি একটি কোচিং সেন্টার যাদের অবস্থান ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে। তারা মূলত NEET/JEE (Advanced) এসব পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে থাকে। এছাড়া, তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তাদের নানা শিক্ষার্থীদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

সেসব ভিডিওতে প্রদর্শিত শিক্ষার্থীদের পোশাকের তুলনা করলেও প্রচারিত ভিডিওটির সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওটি ভারতের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” এ ধারণকৃত এবং প্রদর্শিত শিক্ষার্থীরা উক্ত প্রতিষ্ঠানটিতে পড়াশোনা করেন।

সুতরাং, ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” নামের একটি কোচিং সেন্টারে সংযুক্ত প্রযুক্তির দৃশ্যকে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজে ধারণকৃত দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূস, নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিংকে জড়িয়ে সময় টিভি’র নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “শি জিনপিংকে চীনা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ভুলে ড: মুহাম্মদ ইউনুসকে জানিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভি’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “শি জিনপিংকে চীনা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ভুলে ড: মুহাম্মদ ইউনুসকে জানিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে সময় টিভি কোন ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে সময় টিভির ডিজাইন নকল করে ভুয়া এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে সময় টিভি’র নাম, লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘২৯  জানুয়ারি ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে সময় টিভি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া সময় টিভি’র কতৃক প্রকাশিত অন্যান্য ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির টেক্সট ফন্টের পার্থক্য রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, সময় টিভি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নববর্ষ-২০২৫ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অধ্যাপক ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন বছরের শুভেচ্ছা।’ গত ২৭ জানুয়ারি এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

সুতরাং,  “শি জিনপিংকে চীনা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ভুলে ড: মুহাম্মদ ইউনুসকে জানিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি” শীর্ষক শিরোনামে সময় টিভির নামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

শরীয়তপুরে মুসলিম নারীর মৃতদেহকে হিন্দু দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় হিজাব ও বোরকা না পরায় এক নারীকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় হিজাব ও বোরকা না পরায় এক নারীকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা নারী মুসলিম এবং তার নাম মোছাঃ কাকলি আক্তার। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে উক্ত নারী আত্মহত্যা করেছেন।

অনুসন্ধানে জাজিরা টাইমস নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৭ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডে থাকা ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। 

Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ড এবং পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, পদ্মাসেতুর দক্ষিণ থানার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত কাকলি আক্তার উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের হাজী জাহেদ আলী মাদবর কান্দি গ্রামের জুলহাস মাদবরের মেয়ে।

প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পরবর্তীতে দৈনিক দেশেরপত্র নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে গত ২৭ জানুয়ারি “শরীয়তপুরে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবতীর মরদেহ উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি সকালে শরীয়তপুরের পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানাধীন পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত কাকলি আক্তার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের হাজী জাহেদ আলী মাদবর কান্দি গ্রামের জুলহাস মাদবরের মেয়ে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে কাকলি আক্তার আত্মহত্যা করেছেন।

প্রতিবেদনে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। প্রাথমিক সুরতহালে তেমন কিছু বোঝা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। তিনি বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি নিহত হওয়া এই ব্যক্তি মুসলিম। মেয়েটির নাম মোছাঃ কাকলি আক্তার। ডাক নাম মুন্নি। বয়স ১৬ বছর৷ বাবার নাম জুলহাস মাদবর। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিটি প্রোপাগান্ডা বলেও দাবি করেন তিনি। 

সুতরাং, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় নিহত মুসলিম নারীকে হিন্দু দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

অন্তর্বর্তী সরকারে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে শীর্ষক মন্তব্য করেননি হাসনাত আবদুল্লাহ 

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে”।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে” শীর্ষক কোনো মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পেজেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত হাসনাত আবদুল্লাহর জাতীয় ইস্যুতে করা মন্তব্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।  

আলোচিত ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহর যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তার বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে “নিহতদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়া হবে: সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ | Hasnat Abdullah | ATN News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটিতে জুলাইয়ের আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও স্বীকৃতি সংক্রান্ত আলোচনা করা হলেও ভারতের বিষয়ে কোন মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেননি।

সুতরাং, “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে” শীর্ষক মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেছেন বলে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিপিএল উপস্থাপক ইয়াশার ভক্তের সাথে মিথস্ক্রিয়ার ভিডিওকে ভারতীয় পর্যটককে হেনস্তার দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশে বেড়াতে আসা একজন ভারতীয় পর্যটককে হয়রানি করা হয়েছে দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) ‘ Kanglus found an Indian tourist and can’t stop harrasing her. Imagine the the rotten fish smell she has to gone through’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় এক্স(সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটককে হয়রানির দৃশ্য নেই বরং, বিপিএলে চিটাগং কিংসের হোস্ট (উপস্থাপক) ইয়াশা সাগরের সাথে তার একজন ভক্তের ছবি তোলার সময় ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কাউকে হেনস্তা সংক্রান্ত কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে সিলেটের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘Sylhetview’ এর ফেসবুক পেজে গত ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ এ ‘হাসি মুখে দর্শকদের সাথে সেলফি তুললেন ইয়াশা সাগর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক আমাদের সময় এর ওয়েবসাইটে গত ০২ জানুয়ারি “বিপিএল মাতাচ্ছেন ইয়াশা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার মডেল-অভিনেত্রী, ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার ও ক্রিকেট প্রেজেন্টার ইয়াশা সাগারকে চলমান বিপিএলে চট্টগ্রাম কিংসের ‘অফিসিয়াল হোস্ট’ (উপস্থাপক) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ক্রিকেট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিডি ক্রিকটাইম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত  একটি প্রতিবেদন থেকেও এ বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়া, তার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট এবং সময় টিভিতে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে দেখা যায় যে তিনি বাংলাদেশে তার সময় এবং কাজ উপভোগ করছেন। বিডিক্রিকটাইমের এক প্রতিবেদনে তাকে বাংলাদেশের আতিথেয়তার প্রশংসাও করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর নারী বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটক নন এবং তিনি হয়রানিরও স্বীকার হননি।

সুতরাং, বিপিএল হোস্ট (উপস্থাপক) ইয়াশা সাগরের সাথে একজন ভক্তের ছবি তোলার সময় ধারণকৃত দৃশ্যকে বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটককে হয়রানির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাংবাদিক মাসুদ কামাল নিজেকে বড় আওয়ামী লীগ বলে দাবি করেননি

0

সম্প্রতি, ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামালের নিজের বিষয়ে করা মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসুদ কামাল নিজের বিষয়ে কিংবা নিজেকে আওয়ামীলীগার দাবি করে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে তাঁর করা মন্তব্যকে তার নিজের বিষয়ে করা মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল ‘যারা নৌকা মার্কা নিয়ে জিতছে, আমি তাদের চেয়েও বড় আ. লীগ: মাসুদ কামাল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Desh TV News

উক্ত ভিডিওটিতে মাসুদ কামালকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে কথা বলতে দেখা যায়। আলোচনার একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করলো- যারা নৌকা মার্কা নিয়ে জিতেছে, আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ।”

মূলত, তিনি বুঝিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন তারা নিজেদের আরও বড় আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করছেন। এ সময় তিনি উদাহরণস্বরূপ- স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নের ভারও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ওপর দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

অর্থাৎ, মাসুদ কামাল নিজেকে আওয়ামী লীগ দাবি করে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি।

সুতরাং, মাসুদ কামাল নিজের বিষয়ে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গাজীপুরের বারাকা গার্মেন্টসে টিফিন খেয়ে ১১ জন মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানায় টিফিন খাওয়ার পর ১১ জন মারা গিয়েছে শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাজীপুরের বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় টিফিন খাওয়ার পর ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। বরং, টিফিন খাওয়ার পর শতাধিক কর্মী অসুস্থ হওয়ার ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এই ঘটনায় কারো মৃত্যু হয়নি।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে Mohammad Ujjal Uddin নামের একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৪ জানুয়ারি প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, বারাকা নামের গার্মেন্টসটি টঙ্গীর শিংবাড়ি নামক এলাকায় অবস্থিত। এছাড়াও পোস্টটিতে টিফিন খাওয়ার পরে শতাধিক কর্মী অসুস্থ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পোস্টে ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার উল্লেখ নেই।

পরবর্তী অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে গত ২৪ জানুয়ারি টঙ্গীতে রাতের টিফিন খেয়ে পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি রাতে টঙ্গীর সিংবাড়ী মোড় এলাকার বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামক কারখানায় টিফিন খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও জানা যায়, সেদিন ওভারটাইমে কাজ করানোর জন্য এক হাজার শ্রমিককে রাখা হয়। রাতে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের টিফিন সরবরাহ করে। এর পরই অসুস্থ হতে থাকেন শ্রমিকরা। রোগীর সংখ্যা বেশি হতে থাকায় কারখানার ভেতর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে গাজীপুর শিল্প পুলিশ পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ইসমাইল হোসেন-এর বরাত দিয়ে জানানো হয়, অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে প্রতিবেদনটির কোথাও কারও মারা যাওয়ার তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

আরেক মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে একই ঘটনায় প্রচারিত প্রতিবেদন ও হাসপাতাল থেকে সরাসরি সম্প্রচারকৃত দুটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এসব ভিডিওতেও মারা যাওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। 

দাবিটির বিষয়ে জানতে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্কানারকে জানান,  বারাকা ফ্যাশন লিমিটেডের ঘটনায় প্রায় ১২০ জনের মত অসুস্থ হয়েছিল। কিন্তু কেউ মারা যায়নি।

সুতরাং, কর্তৃপক্ষের সরবরাহকৃত টিফিন খেয়ে টঙ্গীর বারাকা নামের কারখানায় অসুস্থ হয়ে ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র