ভারতের কোচিং প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত প্রযুক্তির দৃশ্যকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যেখানে দেখা যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের আইডি কার্ড সদৃশ কোনো একটি বস্তু স্ক্যান করছেন৷ উক্ত ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “উপদেষ্টাদেরকে ধন্যবাদ এমন একটি প্রযুক্তি স্কুল-কলেজে দেওয়ার জন্য”। অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো স্কুল-কলেজে ধারণকৃত যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা স্কুল-কলেজে দিয়েছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি প্রায় ১৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে ধারণকৃত নয় বরং, ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” নামের একটি কোচিং সেন্টারে ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া  যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে “মেডিক্যাল ওয়াল্লাহ” নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কেবলমাত্র প্রচারিত পোস্টে উক্ত ভিডিওটি মিরর করে প্রচার করা হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইন্সটাগ্রাম পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “আয়াম ক্যারিয়ার ইন্সটিটিউট, ইন্দোর”। তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত স্ক্রিনেও এই নামটি প্রদর্শিত হতে লক্ষ্য করা যায়।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” এর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া যায় যা থেকে জানা যায় যে, এটি একটি কোচিং সেন্টার যাদের অবস্থান ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে। তারা মূলত NEET/JEE (Advanced) এসব পরীক্ষার প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে থাকে। এছাড়া, তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তাদের নানা শিক্ষার্থীদের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

সেসব ভিডিওতে প্রদর্শিত শিক্ষার্থীদের পোশাকের তুলনা করলেও প্রচারিত ভিডিওটির সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওটি ভারতের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” এ ধারণকৃত এবং প্রদর্শিত শিক্ষার্থীরা উক্ত প্রতিষ্ঠানটিতে পড়াশোনা করেন।

সুতরাং, ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরের “আয়াম ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট” নামের একটি কোচিং সেন্টারে সংযুক্ত প্রযুক্তির দৃশ্যকে বাংলাদেশের স্কুল-কলেজে ধারণকৃত দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img