Home Blog Page 112

বেত ব্যবহারের অনুমতির বিষয়ে ভারতের কেরালার সংবাদকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র একটি ফটোকার্ড প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “এখন হয়ত শিক্ষার মান ভালো হতে পারে। ধন্যবাদ ড.ইউনুস স্যার”। প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে লেখা রয়েছে, “বেত ব্যবহারের অনুমতি পেলেন শিক্ষকরা”।

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে বেত ব্যবহারের অনুমতি পেলেন শিক্ষকরা।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষকদের বেত ব্যবহারের অনুমতির সংবাদটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভারতের কেরালার সংবাদকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফটোকার্ডটি লক্ষ্য করলে তাতে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা’র লোগো এবং ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৫ মার্চ ২০২৫ এর উল্লেখ পাওয়া যায়। এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে গত ১৫ মার্চে আলোচিত বিষয়ে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়াকালীন সময়ে কালবেলার উক্ত ফটোকার্ডটির পোস্টটি সম্পাদিত হতে দেখা যায় এবং বর্তমান সংস্করণে ভারতের রাজ্য কেরালা’র নাম উল্লেখ করে লেখা রয়েছে, “শিক্ষকদের বেত ব্যবহারের অনুমতি দিল কেরালার হাইকোর্ট”।

উক্ত পোস্টটির মন্তব্য সেকশনে এ বিষয়ে একই শিরোনামে গত ১৫ মার্চে কালবেলা’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেত বহনের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে ভারতের দক্ষিণের কেরালা রাজ্যের হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, শিক্ষকের হাতে বেত থাকলে সেটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলবে এবং তাদের সামাজিক অপরাধ থেকে দূরে রাখবে। একই সঙ্গে আদালত রায়ে স্পষ্ট করেছে, এটি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক নয়, বরং এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। শনিবার (১৫ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই রায়ের তথ্য জানা যায়।…”

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় “Act only after probe in plaint against teachers: HC to cops” শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে গত ১৪ মার্চে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালা হাইকোর্ট রায় দিয়েছে যে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অপরাধের অভিযোগ এলে আগে প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে, তবে তদন্ত চলাকালে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এই রায় কেরালার তিরুবনন্তপুরমের এক শিক্ষককে আগাম জামিন দেওয়ার সময় দেওয়া হয়, যিনি ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে শত্রুতাবশত বেত দিয়ে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন। তবে তিনি দাবি করেন, তিনি শত্রুতাবশত নয়, বরং শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সামান্য শাসন করেছিলেন।

আদালত মনে করে, শিক্ষকদের শুধু শিক্ষাদান নয়, শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বও আছে। তাদের সামান্য শাসনের জন্য শাস্তি দেওয়া উচিত নয়, কারণ তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পথপ্রদর্শক। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা, মাদকাসক্তি ও শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে বলেও আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আদালত মত দেয়, শিক্ষকেরা চাইলে স্কুলে বেত রাখতে পারবেন, তবে এটি ব্যবহার করা জরুরী নয়, বরং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রতীকী সতর্কতা হয়ে থাকবে। তবে, অযৌক্তিক শারীরিক নির্যাতন বা কষ্ট দেওয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাই পুলিশকে প্রাথমিক তদন্তে প্রকৃত ঘটনা ও মিথ্যা অভিযোগের মধ্যে পার্থক্য করতে হবে।

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভারতের কেরালার।

তাছাড়া, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’তে গত বছর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে একটি পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে ২০২৩ সালে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “২০১০ সালে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড ও সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের (রিট পিটিশন নং ৫৬৮৪/২০১০) প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক শাস্তি অসাংবিধানিক (বিশেষ করে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২, ৩৫ (৫) এর পরিপন্থী ) ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন ঘোষণা করে রায় প্রদান করেন। এ রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১ ধরনের শারীরিক ও দুই ধরনের মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করতে ২০১১ সালে একটি পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।”

এছাড়া, ২০২১ সালে ডয়চে ভেলে বাংলার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “বাংলাদেশের আইনে ছাত্রদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ৷ ২০১১ সালে হাইকোর্টের এক আদেশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন করে৷ আর তাতে শারীরিক ও মানসিক শাস্তির সংজ্ঞাও দেয়া হয়েছে৷ শারীরিক শাস্তি বলতে যেকোনো ধরনের দৈহিক আঘাত বলা হয়েছে৷ মারধর ছাড়াও আইনে কান ধরা, চুল টানা, বেঞ্চের নিচে মাথা রাখতে বাধ্য করাও দৈহিক শাস্তি৷ আর মানসিক শাস্তির মধ্যে শিশু বা তার পরিবারকে উদ্দেশ্য করে বাজে মন্তব্য বা যেকেনো আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই দুই ধরনের শাস্তি দেয়াকেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেছে৷ যাদের বিরুদ্ধে এই অপরাধ প্রমাণ হবে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির  এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে৷ একই সঙ্গে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে৷”

তাছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেত ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের কেরালায় শিক্ষকদের বেত বহনের অনুমতির ঘটনাকে বাংলাদেশ শিক্ষকদের বেত ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আগামী ২০ মার্চ ইউনূসের পদত্যাগ ও শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কোনো ঘোষণা দেননি সেনাপ্রধান

সম্প্রতি, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান লাইভে এসে চূড়ান্ত ঘোষণা দিল। ২০ মার্চে দেশে আসছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডঃ ইউনূসকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিলো- শীর্ষক একটি তথ্য টিকটকে প্রচার করা হচ্ছে। 

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী ২০ মার্চ শেখ হাসিনাকে দেশে আসার কোনো ঘোষণা দেননি সেনাপ্রধান এবং বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে পদত্যাগের ঘোষণাও দেননি। পাশাপাশি, যমুনা টিভিও এসংক্রান্ত কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য ছাড়াই যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত পোস্টটিতে থাকা ব্যানারটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ব্যানারটিতে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অন্য কোনো গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, সেনাপ্রধানকে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে গত ১৩ মার্চ পিলখানা ট্রাজেডিততে নিহত পরিবারের সদস্য, যোদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের নিয়প একটি ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সর্বশেষ বক্তব্য রাখেন সেনাপ্রধানকে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। কিন্তু বক্তব্যে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

সুতরাং, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান লাইভে এসে চূড়ান্ত ঘোষণা দিল। ২০ মার্চে দেশে আসছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডঃ ইউনূসকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিলো- শীর্ষক দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

সৌদিতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টার প্রচার করা হয়েছে। পোস্টারটিতে মূলধারার গণমাধ্যম ইনকিলাবের সূত্রে লেখা রয়েছে, “জুনের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাচ্ছেন সৌদিতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা।” এছাড়াও, এরই প্রেক্ষিতে পোস্টারটিতে প্রশ্ন করা হয়েছে, “রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়ার অধিকার ইউনূস সরকারকে কে দিয়েছে?” উক্ত পোস্টারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “আজ পাসপোর্ট। এরপর কি নাগরিকত্ব?”।

উক্ত পোস্টার সম্বলিত কিছু পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পাসপোর্ট দিয়ে নাগরিকত্ব দিতে যাচ্ছে দখলদার ইউনুস। অর্থাৎ কিছু বছর পরেই দেখবেন বাংলাদেশ হবে ফিলিস্তিনের মতো। রোহিঙ্গারা এই ভূখণ্ডের মালিকানা দাবী করবে। ডিপস্টেট এর সহায়তায় তারা হবে সবচেয়ে শক্তিশালী জনগোষ্ঠী আর বাঙালী হবে ফিলিস্তিনের মানুষের মতো কেউ জি*হা*দী তো কেউ শরণার্থী।”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার সৌদিতে অবস্থারত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার সৌদি আরবে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে যাচ্ছেন শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রকৃতপক্ষে, রোহিঙ্গারা ১৯৭৫ পরবর্তী সময় থেকেই নানা সময়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়ে সৌদি আরবে গিয়েছে যা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় আগামী জুনের মধ্যে তা নবায়ন করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার৷ তাছাড়া, পাসপোর্ট নবায়ন করার সিদ্ধান্ত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম ইনকিলাবের ওয়েবসাইটে “জুনের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাচ্ছেন সউদীতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা” শীর্ষক শিরোনামে গত ১৩ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “আগামী জুন মাসের মধ্যেই সউদীতে থাকা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা পাসপোর্ট পাচ্ছেন। বিশেষ ক্যাটাগরিতে তাদের এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। সউদী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এরই মধ্যেই ২৫ হাজার ৬৫১ জনের একটি তালিকা পাওয়া গেছে। পাসপোর্ট কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য সরকারের কাছে অর্থ বরাদ্দও চাওয়া হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অনেক কম। এতে সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

১৯৭৫ সালের পর থেকে কয়েক ধাপে সউদী আরবে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেন। এই রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে সেখানে গেছেন। আবার অনেক রোহিঙ্গা সউদীতে অবস্থানকালে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। সউদী সরকার বলেছে, এমন রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬৯ হাজার। তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। নবায়ন করতে হবে। গত বছর মে মাসে বাংলাদেশ সরকার এসব রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়ন করে দিতে সম্মত হয়। এজন্য বাংলাদেশ ও সউদী আরবের মধ্যে সমঝোতা সই হয়। সে অনুযায়ী উভয়পক্ষ একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে। বর্তমানে ওয়ার্কিং গ্রুপ রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রদানে কাজ করছে।”

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ডয়চে ভেলে বাংলার ওয়েবসাইটে “রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়নের সিদ্ধান্ত” শীর্ষক শিরোনামে গত বছরের ১২ মে’তে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “সৌদি আরবে অবস্থান করা ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট নবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার [বিগত আওয়ামী লীগ সরকার]।… ২০১০ সাল থেকে তারা (সৌদি আরব) মূলত এই পাসপোর্ট নবায়নের জন্য চাপ দিচ্ছে৷… রোববার [১২ মে ২০২৪] [সৌদির এক] প্রতিনিধি দল [সাবেক] স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে৷ ওই বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দ্রুত নবায়নের জন্য চাপ দেওয়া হয়৷ এক পর্যায়ে বাংলাদেশ সরকার তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়৷”

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ইস্যু বিষয়ে উক্ত প্রতিবেদন থেকে এছাড়াও জানা যায়, ‘মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক সৌদি আরবে যাওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘৭৫ এর পরবর্তী সময়ে সৌদি সরকার বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আড়াই লাখ করে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ তখন আমরা [বাংলাদেশ] পাঠিয়েছিলাম৷ পাকিস্তানও পাঠিয়েছিল৷ আমরা যে ভুলটি করেছি, সেটা পাকিস্তান করেনি৷ পাকিস্তান কিন্তু তাদের জন্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করে৷ সেই ডকুমেন্টে তারা নামের পাশে ব্র্যাকেটে আর লিখে দেয়৷ অর্থাৎ পাকিস্তানি নাগরিক হলেও তারা রোহিঙ্গা৷ কিন্তু বাংলাদেশ সরাসরি তাদের পাসপোর্ট দিয়ে দেয়৷ এটা তখনকার প্রশাসনে যারা ছিলেন তাদের ভুল৷ মারাত্মক ভুল৷ তখন কিন্তু সৌদি আরব আমাদের বলেনি, তাদের পাসপোর্ট দিতে হবে৷ আমরাই আগ্রহী হয়ে তাদের পাসপোর্ট দিয়েছিলাম৷ সেটাই এখন আমাদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ যত দিন যাচ্ছে সংকট ততই বাড়ছে৷”

অর্থাৎ, পাসপোর্ট নবায়নের সিদ্ধান্ত লম্বা সময় ধরে সৌদি আরবের চাপের ফলে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই নেওয়া হয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছিল মূলত তারও অনেক আগে ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে। উল্লেখ্য যে, ২০২৪ সালে পাসপোর্ট নবায়নে সম্মত হওয়ার আগে নানা সময়ে নানা সংখ্যার রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়ার বিষয়ে সৌদি আরব বাংলাদেশকে নিয়মিত চাপ দিলে সেসময় বাংলাদেশ সরকার পাসপোর্ট দিতে অস্বীকৃতি জানায়। অবশেষে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সরকার মেনে নেয়।

এছাড়া, গত বছরের মে মাসে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠবিবিসি নিউজ বাংলায় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। উক্ত প্রতিবেদনগুলো থেকেও জানা যায়, গত বছর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সৌদিতে থাকা ওই ৬৯ হাজার রোহিঙ্গার পাসপোর্ট বাংলাদেশ নবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতবছর ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “তারা তো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছিল৷ সুতরাং আমরা শুধু তাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দেব৷ তাদের নাম ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে, তেমন থাকবে”। এছাড়াও জানা যায়, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে নানা ধাপে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি পাসপোর্টে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিল।

উল্লেখ্য যে, কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, পাসপোর্ট দেওয়ার কারণে কিছুদিন পরই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ফিরে এসে ভূখন্ড দখল করবে। তবে, প্রকৃতপক্ষে উল্লিখিত রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রায় চার যুগ আগে থেকেই নানা ধাপে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, উল্লিখিত রোহিঙ্গাদের সৌদি আরবের ফেরত দেওয়ার বিষয়ে বা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে চলে আসার বিষয়েও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং, মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে গত ০৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আলদুহাইলানের বরাতে জানানো হয়, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকের পাসপোর্ট নবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাসপোর্ট নবায়ন হলেও তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না সৌদি আরব।

সুতরাং, প্রায় চার যুগ আগে রোহিঙ্গাদেরকে দেওয়া বাংলাদেশি পাসপোর্টগুলো বর্তমান সময়ে নবায়নের সিদ্ধান্তকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে যাচ্ছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চলতি বছরের নয়, হোলি উৎসবে নারীদের শ্লীলতাহানির ভাইরাল ছবিটি ২০১৭ সালের

0

গত ১৪ মার্চ উদ্‌যাপিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ ধর্মীয় উৎসব দোলপূর্ণিমা। দিনটি দোলযাত্রা বা রঙের উৎসব নামেও বেশ পরিচিত।

সম্প্রতি, এই হোলি উৎসবে মুসলিম নারীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

প্রায় একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হোলি উৎসবে নারীদের শ্লীলতাহানির ভাইরাল ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০১৭ সালে পুরান ঢাকায় হোলি উৎসবের সময় বখাটে কর্তৃক দুই বোনকে জোর করে রঙ মাখানোর ঘটনার। তাছাড়া, সেই সময় উক্ত ঘটনায় আটককৃত তিনজনের মধ্যে অন্তত দুইজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ছবিটি রিভার্স ইমজে সার্চ করে বাংলা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ প্রকাশিত ‘হোলি উৎসবে জোর করে রঙ মাখানোর মামলায় ৩ তরুণ কারাগারে’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে হোলি উৎসবের সময় দুই বোনকে জোর করে কিছু বখাটে রঙ মেখে দেয়। 

জানা যায়, ভুক্তভোগী দুই বোনের বড় ভাই আহাদ ফেরদাউস সেসময় এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় বখাটেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ১০ (৩০) ধারায় একটি মামলা করেন। এরপর আকাশ (১৯), মো. সিফাত (২০) ও মো. মামুন (১৮) তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বখাটেরা সবাই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়া।

প্রতিবেদনটিতে সেই সময়ের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘গত ১২ মার্চ (২০১৭) পুরান ঢাকায় শাঁখারীবাজারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হোলি উৎসবের সময় দুই বোনের মুখে জোর করে কিছু বখাটে রঙ মেখে দেয়। এমনকি তাদের গায়েও হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। বখাটেরা হোলি খেলায় ঢুকে গিয়ে পথচারী ও অফিসগামী বিভিন্নজনকে রঙ মাখিয়ে লাঞ্ছিত করেছে।’

গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ১৬ মার্চ উক্ত ঘটনা বিষয়ে ‘হোলিতে জোর করে রঙ মাখানোর মামলায় আদালতে ২ বোনের জবানবন্দি’ শীর্ষক শিরোনামে আরও একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে আদালত সূত্রে জানায়, জবানবন্দিতে ঘটনার পুরো বিবরণ তুলে ধরেন দুই বোন। গত ১২ মার্চ (২০১৭) সূত্রাপুরের বাসা থেকে বের হয়ে রিকশাযোগে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তারা। ওইদিন ছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হোলি উৎসব। বাহাদুর শাহ পার্ক পেরোনোর পর ঢাকা জেলা জজ আদালতের মূল ফটকের সামনে এলে কয়েকজন বখাটে যুবক রিকশার গতিরোধ করে। এরপর দুই বোনের মুখে রঙ মেখে দেওয়া ছাড়াও কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে তারা। তখন দুই বোনের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসে তাদের রক্ষা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র।

এই প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, দুই বোনকে জোর করে রঙ মাখানোর অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত তিন বখাটে আকাশ (১৯), মো. সিফাত (২০) ও মো. মামুন (১৮)।

 উক্ত ঘটনায় আটককৃত তিন জনের নাম পর্যালোচনা করে এটা নিশ্চিত যে আটকৃত  মো. সিফাত  ও মো. মামুন মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তবে আটককৃত অপর ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত নয়।

সুতরাং, ২০১৭ সালে পুরান ঢাকায় হোলি উৎসবের সময় বখাটে কর্তৃক দুই বোনকে জোর করে রঙ মাখানোর ঘটনার ছবিকে চলতি বছরের হোলি  উৎসবে মুসলিম নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে এলাহাবাদে নরেন্দ্র মোদি শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

সম্প্রতি “ব্রেকিং নিউজ. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ব্যাক্তিগত আলোচনায় যুক্ত হতে এই প্রথম সরাসরি আলোচনা করতে এলাহাবাদ পৌঁছেছেন ভারত সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিটেনে পাঠানোর বিষয়েই এই আলোচনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনার পর উঠে আসে শেখ হাসিনার ব্রিটেনে পাঠানোর বিষয়টি। তারি প্রেক্ষাপটে দীর্ঘ ৭ মাস পর সরাসরি দুই নেতার বৈঠক শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটেনের নাগরিকত্ব সনদ চাইলে সরাসরি নাকচ করেন ব্রিটেন গভমেন্ট। কারন তখন তাকে রাখার মতো প্রক্রিয়াকৃত আইন ছিলো না………। আগামীকাল দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠকে ঘুড়ে দাঁড়ায় রাজনৈতিক চিত্র। আজকে চুড়ান্ত করা হবে শেখ হাসিনাকে ব্রিটেন পাঠানোর প্রস্তুতি এবং তারিখ।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামের পোস্ট দেখুন এখানে। 

একই দাবিতে থ্রেডসের পোস্ট দেখুন এখানে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে এলাহাবাদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গাড়ি বহরের নয় বরং, ২০২৪ সালে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর তিরুমালা মন্দির পরিদর্শনের সময়ে তার গাড়ি বহরের পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Distoday News’ নামক একটি তেলেগু  গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০৬ অক্টোবর  ‘High Security Convoy Of Chief Minister Nara Chandrababu Naidu In Tirumala | Distoday News’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কি ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘The Times of India’ এর ২০২৪ সালের ০৫ অক্টোবর “Brahmotsavams off to spectacular start: CM Chandrababu Naidu presents silk robes at Tirumala temple amid Tirupati laddu row” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী নারা চন্দ্রবাবু নাইডু ৪ অক্টোবর (২০২৪) তিরুমালা মন্দিরে ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরকে ‘পাট্টু বস্ত্রম’ (রেশমের পোশাক) উপহার দিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বার্ষিক ব্রহ্মোৎসবের প্রাক্কালে নাইডু ১৪তমবারের মতো ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীকে ‘পাট্টু বস্ত্রম’ উপহার দিয়েছেন। (অনূদিত)

এছাড়াও সেসময়ে একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম এ বিষয়ে প্রতিবেদন(,)প্রকাশ করে। 

অর্থাৎ, শেখ হাসিনার সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে এলাহাবাদে নরেন্দ্র মোদির গাড়ি বহরের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০২৪ সালের ভিন্ন ঘটনার।

তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার সাথে নরেন্দ্র মোদির আলোচনা সম্পর্কিত কোন খবর গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায় নি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনার সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে এলাহাবাদে নরেন্দ্র মোদির গাড়ি বহরের দৃশ্য দাবিতে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর তিরুমালা মন্দির পরিদর্শনের সময়ে তার গাড়ি বহরের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভারতের নারী নির্যাতনের পুরোনো ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চিত্র দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, গাছের সাথে হাত বেঁধে একজন নারীকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। পোস্টগুলোর শিরোনামে ঘটনাটিকে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের ঘটনা দাবি করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং, ভারতের উত্তর প্রদেশের ২০১৮ সালের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম Hindustan Times এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২২ মার্চ Woman publicly flogged by husband on panchayat’s orders for eloping শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির নারী, তার পোশাক ও নির্যাতনকারীর মিল রয়েছে। এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনাটি ২০১৮ সালের ১০ মার্চ ভারতের উত্তর প্রদেশের বুলান্দশহর জেলার লৌঙ্গা গ্রামে ঘটে। নির্যাতনের শিকার নারী ধর্মেন্দ্র লোধি নামের তার এক প্রতিবেশী পুরুষের সাথে পালিয়ে গেলে পরবর্তীতে তাদেরকে বুঝিয়ে গ্রামবাসীরা ফিরিয়ে আনেন। এ ঘটনায় গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দেশে শাস্তিস্বরূপ ওই নারীর স্বামী তাকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতন করেন বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম NDTV এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২৪ মার্চ Woman Beaten, Men Watch: Are We A Nation Of Bystanders? শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনায় প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে মহিলাকে নির্যাতনের ভিডিওটিও দেখতে পাওয়া যায়।

সুতরাং, ভারতের উত্তর প্রদেশে নারী নির্যাতনের ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চিত্র দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র


পানিতে ডুবে বাবা-মেয়ের মৃত্যুর দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বানোয়াট 

0

সম্প্রতি, ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মাইক্রোবাস রাস্তার পাশের খাদের পানিতে ডুবে গেলে সন্তানকে এভাবেই বুকে জড়িয়ে শেষ রক্ষার জন্য চেষ্টা করে বাবা। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আদরের মেয়েকে বুক থেকে ছাড়েননি এই বাবা। পানিতে ডুবে দুজনেরই মৃত্যু হয়।- শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়,ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মাইক্রোবাস রাস্তার পাশের খাদের পানিতে ডুবে বাবা মেয়ের মারা যাওয়ার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত দুর্ঘটনায় মেয়ে বুলবুলিসহ একই পরিবারের ৮ জন মারা গেলেও মেয়ের বাবা রতন মারা যাননি।

মূলত, ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট আত্মীয়ের জানাজায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ময়মনসিংহের ফুলপুরে মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে শিশুসহ একই পরিবারের ৮ জন নিহত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত কয়েকবছর ধরে, ‘ময়মনসিংহের ফুলপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় মাইক্রোবাস রাস্তার পাশের খাদের পানিতে ডুবে গেলে সন্তানকে এভাবেই বুকে জড়িয়ে শেষ রক্ষার জন্য চেষ্টা করে বাবা। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আদরের মেয়েকে বুক থেকে ছাড়েননি এই বাবা। পানিতে ডুবে দুজনেরই মৃত্যু হয়।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাইক্রোবাস পুকুরে পড়ে আলোচিত ছবিটির মেয়ে বুলবলিসহ পরিবারের ৮ সদস্য মারা গেলেও তার বাবা রতন ঐ দুর্ঘটনায় মারা যাননি। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও উক্ত দাবিটি একাধিকবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম।

আসিফ নজরুলের পদত্যাগের দাবিটি মিথ্যা

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পদত্যাগ করেছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিটির তথ্যসূত্র হিসেবে স্বাধীন নিউজ২৪৭ নামক একটি সাইটে প্রকাশিত কথিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনকে উল্লেখ করা হয়। কথিত উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের পদত্যাগের দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনোরকমের নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের ডোমেইনে তৈরি একটি ভূঁইফোড় সাইটে প্রকাশিত একটি ভুয়া প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে পোস্টের মন্তব্য সেকশনে পোস্টকারীকে স্বাধীন নিউজ২৪৭ নামের একটি সাইটে প্রকাশিত একটি কথিত প্রতিবেদনকে তথ্যসূত্র হিসেবে উল্লেখ করতে দেখা যায়। গত ১৬ মার্চে স্বাধীন নিউজ২৪৭ নামক একটি সাইটে ‘ব্রেকিং নিউজ: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পদত্যাগ, সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা’- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। কথিত উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আকস্মিকভাবে তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আজ দুপুরে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেন এবং জানিয়েছেন যে আজ সন্ধ্যা ৭টায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করবেন। হঠাৎ এই পদত্যাগ কেন? সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বিচার বিভাগ ও মানবাধিকার ইস্যুতে সরকারের কিছু নীতির সঙ্গে দ্বিমত থাকায় তিনি কিছুদিন ধরেই অসন্তুষ্ট ছিলেন।”

তবে, গতকাল (১৬ মার্চ) আসিফ নজরুলকে কোনো সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ করতে দেখা যায়নি এবং নিকট ভবিষ্যতেও পদত্যাগ করার বিষয়ে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য সম্প্রতি আসিফ নজরুলকে করতে দেখা যায়নি।

এছাড়া উক্ত স্বাধীন নিউজ২৪৭ ওয়েবসাইটটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ওয়েবসাইটটি ব্লগস্পটের ডোমেইনে একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট। 

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পদত্যাগ করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis

ভিডিওটি ভারতে হোলি উৎসবে মুসলিম ব্যক্তিকে মারধরের নয়

0

সম্প্রতি হোলি উৎসবকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকে মারধর এবং তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে “অসাম্প্রদায়িকতার সবক দেওয়া ভারতে মুসলমানদের অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে তার একটি ছোট্ট নমুনা!” শীর্ষক ক্যাপশনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, হামলার শিকার ব্যক্তিরা মুসলিম ধর্মাবলম্বী

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রাম প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি ভারতে হোলি উৎসবে মুসলিম ব্যক্তিকে মারধরের ভিডিও নয়। বরং, রঙ লাগানো নিয়ে বিরোধের জেরে দিল্লিতে রাজু কুমার ও রাজেশ নামে দুই হিন্দু ব্যক্তিকে মারধরের ভিডিও।

এই বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে  ভারতীয় পত্রিকা হিন্দুস্তানের ওয়েবসাইটে গত ১৫ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই ভিডিওর কিছু স্থিরচিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিল্লির দ্বারকার গোয়লা ডেইরি এলাকার ছঠ পার্কে হোলি খেলাকে কেন্দ্র করে দুই যুবক মারধরের শিকার হয়েছেন। শুক্রবার হোলি উদ্‌যাপনের সময় ভুলবশত এক স্থানীয় যুবকের গায়ে রঙ পড়ে গেলে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ভুক্তভোগী রাজু কুমার (৩৫) ওই যুবককে চড় মারেন। পরে সে ৪-৫ জন সঙ্গী নিয়ে ফিরে এসে রাজু ও তার বন্ধু রাজেশকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং রাজুর ট্যাক্সি ভাঙচুর করে। এসময় রাজুর মাথায় আঘাত করে তাকে এত মারধর করা হয় যে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন রাজু থানায় গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা স্থানীয় বাসিন্দা এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।.

Screenshot: Hindustan.

উক্ত প্রতিবেদনে ‘Rockky’ নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্টের বরাতে ঘটনাটির ভিডিও যুক্ত করা হয়, যা দাবিকৃত ভিডিওর সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।

এ বিষয়ে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমেও অনুরূপ তথ্য পাওয়া যায়। (,,)

উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলায় মসজিদে যাওয়ার পথে হোলির রঙ মাখানোকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে শরীফ নামের এক মুসলিম ব্যক্তি হামলার শিকার হয়ে মারা যান বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে উন্নাও পুলিশের দাবি, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্টে তাঁর মৃত্যু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) হয়ে হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় অন্যান্য দিক গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সুতরাং, ভারতে হোলি উৎসবে বিরোধের জেরে হিন্দু ব্যক্তিকে মারধরের ভিডিও মুসলিম ব্যক্তিকে মারধরের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মাকে গর্তে ফেলে হত্যাচেষ্টার  ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাজানো

সম্প্রতি “ছেলে মা’কে কুয়ার বিতরে পালানোর চেষ্টা। কতটা খারাপ হলে এমন কাজ করতে পারে নিজের মা’র সাথে” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে প্রচারিত ইউটিউব পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাকে গর্তে ফেলে হত্যা চেষ্টার দৃশ্যের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয় বরং, স্ক্রিপ্টেড বা সাজানো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Ahosan Comedy Club’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ৫ মার্চ ‘ছেলেটি এক বৃদ্ধ মাকে গর্তে ফেলে দিচ্ছে. ! হাইরে দুনিয়া।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

Video Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, উক্ত ভিডিও প্রচারকারী চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এটি একটি কন্টেন্ট ক্রিয়েশন চ্যানেল। তারা বিভিন্ন ধরণের বিনোদনমূলক ভিডিও (,,)  বানিয়ে থাকেন। আলোচিত ভিডিওতে থাকা বয়স্ক নারীটি উক্ত চ্যানেল মালিকের সম্পর্কে নানী হন এবং তার সাথে একাধিক বিনোদননূলক ভিডিওতে (,,) এই বয়স্ক নারীটিকে দেখা গেছে।

অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য প্রমাণ থেকে এটি নিশ্চিত যে, আলোচিত ভিডিওটি একটি স্ক্রিপ্টেড বা সাজানো ভিডিও।

সুতরাং, মাকে গর্তে ফেলে হত্যা চেষ্টার  বাস্তব ঘটনা দাবিতে একটি স্ক্রিপ্টেড বা সাজানো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র