সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে ‘ইজরাইলকে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া ইউনুস আজকে বাংলাদেশের সরকার প্রধান’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার কোনো সহায়তা দেননি বরং, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইউনূস সেন্টার বিষয়টি মিথ্যা বলে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের লোগো দেখতে পাওয়া যায়৷ উক্ত সূত্র ও ভিডিওটির বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়া ইসরায়েলকে প্রত্যাখান করেছিল বঙ্গবন্ধুর সরকার’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ইসরায়েলের বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান ও তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ এবং ফিলিস্তিন-ইসরায়েল প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়েছে৷ তবে, ভিডিওটিতে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ পরিচালনা করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি৷
এই প্রসঙ্গে রিউমর স্ক্যানার ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লায়র হাইয়াতের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে। মি. লায়র রিউমর স্ক্যানারের সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে জানিয়েছেন, “ইউনূস কর্তৃক ইসরায়েলকে সহায়তার বিষয়টি আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানলাম। তাছাড়া, ইসরায়েল দাতাগোষ্ঠীর কোনো সহায়তার বিষয় জনসম্মুখে প্রকাশ করে না।”
পরবর্তীতে, রিউমর স্ক্যানার বিষয়টি নিয়ে ইউনূস সেন্টারের সাথেও কথা বলেছে। ড. ইউনূসের মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আলোচিত দাবিটি মিথ্যা বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, “বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক কারণ ভুয়া এই সংবাদটি ড. ইউনূসের সুনামকে ইচ্ছাকৃতভাবে কলঙ্কিত করছে বলে মনে হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, পূর্বেও একাধিকবার একই দাবি বানোয়াট তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে রিউমর স্ক্যানার সেসময় ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন ও কুইক ফ্যাক্ট প্রতিবেদন প্রকাশ করে।