সম্প্রতি, “আপনিও পেতে পারেন ৯ কোটি টাকা থাকে যদি পুরনো ১ টাকার কয়েন” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে , এখানে ও এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
বিগত বছরে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুরানো ১ টাকার কয়েনের বিনিময়ে ৯ কোটি পাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি তথ্যকে বাংলাদেশে ভুলভাবে উপস্থাপন করে ১৯৮৫ সালের পূর্বের ১ টাকার কয়েন বা মুদ্রার দাবিতে উপস্থাপন করে প্রচার করা হচ্ছে।
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় অনলাইন গণমাধ্যম ‘abplive’ এ ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট “1 Rupee Coin From 1885 Fetches 10 Crore Rupees On Online Auction” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সম্প্রতি ১৮৮৫ সালের ব্রিটিশ আমলের এক টাকার একটি মুদ্রার দাম অনলাইন নিলামে ১০ কোটি রুপি পর্যন্ত উঠেছে।
পরে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যম ‘জি নিউজ‘ ও এটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।

এই তথ্যটি থেকেই বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে যে, ১৯৮৫ সালের আগের ১ টাকার মূল্যমান ৯ কোটি টাকা। প্রচারিত পোস্টগুলোতে দাবি করা হচ্ছে, ১৯৮৫ সালের আগের ১ টাকার কয়েন বা মুদ্রা কারো কাছে থাকলেই তিনি OLX এ গিয়ে নিজের নাম রেজিস্টার করে কয়েনটিকে বিক্রি করে হতে পারবেন কোটিপতি।
এই পোস্টগুলোর সূত্র ধরে ‘olx.in‘ নামের একটি ওয়েবসাইটে মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের একটি ওয়েবপেজ খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবপেজটি ঘুরে দেখা যায়, সেখানে যেকেউ যেকোনো মুদ্রার ছবি দিয়ে নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী দাম বসিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। এটি মূলত বাংলাদেশের পুরোনো পণ্য বেচা-কেনার প্ল্যাটফর্ম বিক্রয় ডট কমের মতোই একটি ওয়েবসাইট। যেখানে নিজের অপ্রয়োজনীয় পুরোনো জিনিস বিক্রি করা যায়।
এছাড়া, বাংলাদেশের এক টাকার মুদ্রা কোনো প্রাচীন মুদ্রা নয়। এই মুদ্রাটি এখনো প্রচলিত আছে। তবে, সোনালী রঙের এক টাকার মুদ্রাটি এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। এরই প্রেক্ষিতে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর ১৮৮৫ সালের মুদ্রার তথ্যটিকে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
মূলত, ভারতে ২০২১ সালে হওয়া এক নিলামে ১৮৮৫ সালে ছাপা একটি ব্রিটিশ আমলের এক রূপীর কয়েনের দর ওঠে ভারতীয় ১০ কোটি রূপী। যেটি নিয়ে সেসময় ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়৷ এসব সংবাদে মুদ্রা সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয়ের পদ্ধতি সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়। এদিকে, বাংলাদেশে বর্তমানে সোনালী রঙের এক টাকার মুদ্রাটি এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ভারতীয় এক রুপীর কয়েনের ১০ কোটি নিলাম দর ওঠার তথ্যটি ভুলভাবে উপস্থাপন করে ১৯৮৫ সালের পূর্বের ১ টাকার কয়েন বা মুদ্রার মূল্যমান ৯ কোটি টাকা দাবিতে উপস্থাপন করে প্রচার করা হচ্ছে।
পূর্বেও একই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিকবার প্রচার করা হয়েছিলো। সে সময়গুলোতে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।