সম্প্রতি, “মরে যাওয়ার ৪০ বছর পরও অক্ষত পাওয়া গেলো হাফেজের দেহ!! কী সুন্দর জান্নাতি চেহারা! আল্লাহ আমাদের ঈমানী মৃত্যু দিক আমিন” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত এক ব্যক্তির ছবি বিগত কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার হয়ে আসছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটি ৪০ বছর আগের মারা যাওয়া ব্যক্তির দেহ অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারের নয় বরং ২০১৯ সালে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হওয়ার পর ঐ ব্যক্তিকে বাঁচাতে মাটিচাপা দেওয়ার কথিত পদ্ধতি ব্যবহারের সময়ে ধারণকৃত।
অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সামাজিক কর্মী ও লেখক আলী সেরাজি (Ali Sherazi) এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ২০১৯ সালের ২২ জুন আলোচিত ছবিগুলো যুক্ত করে উর্দু ভাষায় লেখা একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, আলী সেরাজিকে এক নারী উক্ত ছবিগুলো পাঠিয়েছেন। ওই নারী জানিয়েছেন, ‘ছবিগুলো তার বাবার। তার বাবা বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়েছেন এবং অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। আলী সেরাজিকে ওই নারী তার বাবার জন্য দোয়া করতে বলেছেন।’
এই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিতে আলী সেরাজির সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি ঘটনাটি সত্য জানিয়ে বলেন, সে সময় উক্ত নারী তার বাবার জন্য দোয়া চেয়ে তাকে উক্ত ছবিগুলো ইনবক্সে পাঠিয়েছিলেন।
রিউমর স্ক্যানার সেই নারীকে শনাক্ত করতে না পারলেও আলী সেরাজির সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয় যে, ঐ ব্যক্তি ৪০ বছর আগে মারা যান নি এবং এটি কোনো মৃতদেহও নয়।
মূলত, পাকিস্তানি লেখক আলী সেরাজিকে ২০১৯ সালে এক নারী তার বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হওয়া বাবাকে মাটিচাপা দিয়ে রাখার কিছু ছবি পাঠিয়ে দোয়া চান। আলী সেই ছবিগুলো তার পেজে প্রকাশ করার পর থেকে বিগত বছরগুলোয় ছবিকে ৪০ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির অক্ষত মৃতদেহ বলে দাবি করা হচ্ছে।
সুতরাং, ৪০ বছর আগে মারা যাওয়ার ব্যক্তির অক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গত আগস্ট মাসে একই ছবি ব্যবহার করে ৩২ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির অক্ষত মৃতদেহ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সে সময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।