বাংলাদেশের কমনওয়েলথের সদস্য পদের ক্রম নিয়ে বিভ্রান্তির নেপথ্যে কী?

১৯৭১ এ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ যে কয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় যোগদান করেছে বা সদস্যপদ লাভ করেছে, কমনওয়েলথ তার মধ্যে প্রথম৷ 

১৯৭২ সালের ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ কমনওয়েলথের সদস্য হিসেবে যোগদান করে৷ কমনওয়েলথ বর্তমানে ৫৬ টি দেশের এক আন্তর্জাতিক সংস্থা যেগুলোতে বিশ্বের ২.৫ বিলিয়ন অর্থাৎ, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বসবাস করে৷ তবে, বাংলাদেশ কমনওয়েলথের কততম সদস্য এটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই বিভ্রান্তির দেখা দেয়৷ অনেকে দাবি করেন বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য, অনেকে আবার দাবি করেন বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩২তম সদস্য। এই বিভ্রান্তির নেপথ্য জানতে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার। 

রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ কমনওয়েলথের ৩৪তম সদস্য কিন্তু, কমনওয়েলথে বাংলাদেশ যোগদান করেছে ৩২তম সদস্য হিসেবে। তাছাড়া, কমনওয়েলথের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও বাংলাদেশকে ৩৪তম সদস্য বলেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।  তবে, দুরকম সংখ্যা হওয়ার কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে আমাদের আরেকটু বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে।

ইতোমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথে যোগদান করেছে। বাংলাদেশ যোগদানের আগে মোট ৩৩ টি দেশ ইতোমধ্যে কমনওয়েলথের সদস্য ছিল৷ কিন্তু, ১৯৬১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ১৯৭২ সালে পাকিস্তান কমনওয়েলথ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে৷ তাই, দুই দেশ কমে কমনওয়েলথে তখন সক্রিয় সদস্য দেশ ছিলো ৩১ টি। এই হিসেবে বাংলাদেশ ৩২তম সদস্য দেশ হিসেবে সদস্যপদ লাভ করে।

উল্লেখ্য যে, বর্ণবাদ নীতির বিরুদ্ধে সদস্য প্রদেশের চাপজনিত আরো কিছু রাজনৈতিক কারণে ১৯৬১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের নাম কমনওয়েলথ সংস্থা থেকে প্রত্যাহার করে৷ তবে, ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা আবারও কমনওয়েলথে ফিরে আসে৷ অন্যদিকে বাংলাদেশকে কমনওয়েলথের সদস্যপদ দেওয়ার প্রতিবাদে পাকিস্তান ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারী কমনওয়েলথ ছেড়ে চলে যায়। 

পাকিস্তানও পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালের ২ আগস্ট কমনওয়েলথে আবারও ফিরে আসে।

এই দুই দেশ ফিরে আসায় বাংলাদেশের সদস্যক্রম ৩৪তম হয়ে যায়৷ বর্তমানে কমনওয়েলথ সংস্থাও বাংলাদেশকে তাদের ৩৪তম সদস্য বলেই অভিহিত করে৷ তবে, কমনওয়েলথে যোগদানের সময় সাউথ আফ্রিকা ও পাকিস্তান ছাড়া মোট ৩১ টি দেশ সক্রিয় সদস্য থাকায় বাংলাদেশ ৩২তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে। 

তাই, যদি জিজ্ঞেস করা হয় বাংলাদেশ কমনওয়েলথের কততম সদস্য? উত্তর হবে: ৩৪তম৷ আবার, যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বাংলাদেশ কততম সক্রিয় দেশ হিসেবে সদস্যপদ লাভ করেছে? তখন উত্তর হবে: ৩২তম।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img