সম্প্রতি, বাংলাদেশে এক নারীর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রকাশ্যে নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, অর্ধদেহ মাটির নিচে পুঁতে থাকা এক নারীকে পাথর সদৃশ বস্তু নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা গ্রহণের পরের ঘটনা বলেও কিছু পোস্ট দাবি করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং আসল কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটির অস্তিত্ব অন্তত ২০২৩ সাল থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে এবং এটি একটি অভিনীত ভিডিওটি।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘SHAMIM AHMED CIP’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ ‘পরকীয়ায় শাস্তি কি’ শীর্ষক শিরোনামে একই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া, এই দীর্ঘ সংস্করণটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে একাধিক ফেসবুক প্রোফাইল থেকেও (১,২) প্রচার হতে দেখা যায়।
অর্থাৎ, এটি সাম্প্রতিক সময়ের ভিডিও নয়।
পরবর্তীতে ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ভিডিওটিতে শুটিংয়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামের উপস্থিতি দেখা যায়। পাথর ছোড়ার ঠিক আগে এক ব্যক্তিকে ‘অ্যাকশন’ বলতে শোনা যায়, যা সাধারণত নাটক বা ভিডিও ধারণের সময় নির্দেশনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ভিডিওতে ছোড়া বস্তুগুলোকেও প্রকৃত পাথর বলে মনে হয়নি। এগুলোর গঠন ও আকার প্রায় একই রকম, যা দেখে কৃত্রিম উপাদান দিয়ে তৈরি বলেই প্রতীয়মান হয়। এসব বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ভিডিওটি সাজানো বা অভিনয়ের দৃশ্য বলে প্রমাণিত হয়।

বিশ্লেষণে ভিডিওটি সাজানো বলে প্রমাণিত হলেও, এর প্রকৃত প্রেক্ষাপট বা কোথায় ধারণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।
সুতরাং, অন্তত ২ বছর পূর্বে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি সাজানো ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশে মধ্যযুগীয় কায়দায় নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- SHAMIM AHMED CIP: YouTube Video