সম্প্রতি ‘তুরস্কে ভূমিকম্পের সময়ও ইমাম নামাজ ছাড়েনি’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

টিকটকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তুরস্কে ভূমিকম্পের সময়ও ইমাম নামাজ না ছাড়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তুরস্কের ভূমিকম্পের সময়ের নয় বরং এটি ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের সময় দেশটির বালি দ্বীপের এক মসজিদ থেকে ধারণকৃত ভিডিও।
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ব্রিটিশ গণমাধ্যম The Guardian এর ইউটিউব চ্যানেল Guardian News এ ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট ‘Indonesian Imam continues prayers in Bali during earthquake‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে থেকে জানা যায়,
এটি ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের ঘটনা। বালি দ্বীপের পাশে লোম্বক দ্বীপে ভূমিকম্প চলাকালীন ভিডিওতে থাকা ইমাম মাগরিবের নামাজ পড়াচ্ছিলেন।
এটির পাশাপাশি দেশীয় গণমাধ্যম RTV এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৭ আগস্ট ‘ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের মধ্যেও নামাজ পড়লেন ইমাম (ভিডিও)‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়।

মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম খালিজ টাইমসের সূত্রে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়,
ইন্দোনেশিয়ার লোম্বক দ্বীপে ভূমিকম্প আঘাত হানার পরও বালি দ্বীপের একটি মসজিদের ইমাম নামাজ পড়ানো অব্যাহত রেখেছিলেন। তার নামাজের ঐ ভিডিওটি সেসময় ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছিল। ইন্দোনেশিয়ায় সংঘটিত ঐ ভূমিকম্পে ৯১ জন নিহত হন।
এছাড়া ব্রিটিশ গণমাধ্যম BBC Bangla এর ইউটিউব চ্যানেলেও ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট ‘মসজিদে ভূমিকম্পের সময় পালিয়ে যাননি যে ইমাম‘ শীর্ষক শিরোনামে এই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

এই ভিডিওগুলোর সঙ্গে তুরস্কের ভূমিকম্পের সময় ইমামের নামাজ না ছাড়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরে সংঘটিত হয়। এতে তুরস্ক-সিরিয়া দুইটি দেশই প্রাণহানি সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়। তবে এ ঘটনায় ভূমিকম্পকালীন মসজিদের ইমামের নামাজ না ছাড়ার কোনো ঘটনার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, ২০১৮ সালের আগস্টে ইন্দোনেশিয়ার লোম্বক দ্বীপে ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এই ভূমিকম্পে লোম্বকের পাশ্ববর্তী বালি দ্বীপও কেঁপে ওঠে। এর মধ্যেই বালির একটি মসজিদের ইমাম নামাজ পড়ানো অব্যাহত রেখেছিলেন। এই ঘটনার ধারণকৃত একটি ভিডিওকেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ভূমিকম্পের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পের সময় দেশটির বালি দ্বীপ থেকে ধারণকৃত নামাজরত একজন ইমামের ভিডিওকে তুরস্কের ভূমিকম্পের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।