সম্প্রতি, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হিন্দু অধ্যাপকের পদত্যাগ এইভাবে নিয়েছে জামাতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন। প্রথমে হিন্দু অধ্যাপককে কুরআনের আয়াত পাঠ করে শোনানো হয়েছে তারপর উনার পদত্যাগ নেওয়া হয়েছে। উনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে”- শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
উক্ত দাবিতে একই ভিডিও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও ব্যাপকভাবে প্রচার হতে দেখা যায়।
বাংলাদেশী ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এক্স (সাবেক টুইটার) এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিন্দু নন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক মুসলিম ধর্মাবলম্বী। এই ব্যক্তির নাম ড. আব্দুল বাছির। তিনি ঢাবির কলা অনুষদের ডিন ছিলেন। তার বিরুদ্ধে গত রমজানে ঢাবির বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত বিষয়ক অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে আপত্তি জানানোর অভিযোগ উঠেছিল।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙার লোগো দেখা যায়।
উক্ত সূত্র ধরে মাছরাঙা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ আগস্ট “ইফতার মাহফিলে বাধা দেয়া কলা অনুষদের ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার কামরাতেই কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পূর্বে ইফতার মাহফিলে করতে বাধা দেয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার কামরাতেই কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত করেন শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একই দিনে সময় টিভির ওয়েবসাইটে “ঢাবির সেই শিক্ষকের রুমেই কোরআন তেলাওয়াত করলেন শিক্ষার্থীরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পবিত্র রমজান উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত বিষয়ক অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে আপত্তি জানানো কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির পদত্যাগ করেছেন। ১৯ আগস্ট দুপুরে আব্দুল বাছিরের পদত্যাগের পর তার রুমেই কোরআন তেলাওয়াত করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে দোয়াও করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষক বাছিরও মোনাজাতে অংশ নেন।
অর্থাৎ, ঢাবির এই অধ্যাপকের নাম ড. আব্দুল বাছির। তিনি একজন মুসলিম।
সুতরাং, ঢাবির মুসলিম অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরকে হিন্দু দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Maasranga News- ইফতার মাহফিলে বাধা দেয়া কলা অনুষদের ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার কামরাতেই কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাত
- Somoy Tv- ঢাবির সেই শিক্ষকের রুমেই কোরআন তেলাওয়াত করলেন শিক্ষার্থীরা
- Rumor Scanner’s Own Analysis