সম্প্রতি “অতি জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা; অন্যথায় অচিরেই নষ্ট হয়ে যাবে দেশের যুব সমাজ এবং বাংলাদেশ ভারতের রাজ্যে পরিণত হবে। এখন আমাদের প্রয়োজন দলবল নির্বিশেষে গণতন্ত্র পূণ উদ্ধারের আন্দোলনে ঝাপিয়ে পরা। অনির্বাচিত অবৈধ সরকারের বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে-মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা” শীর্ষক একটি তথ্যকে ড. ইউনূসের মন্তব্য দাবি করে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশের গণতন্ত্র নিয়ে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এরূপ কোন মন্তব্য করেননি বরং কোনপ্রকার গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে উক্ত মন্তব্যটিকে ড. ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।
গুজবের সূত্রপাত
অনুসন্ধানের শুরুতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই দাবিতে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত বেশকিছু পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।

পরবর্তীতে, একই দাবিতে ২০১৮ সালে প্রচারিত পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।

তবে পোস্টগুলোতে ক্যাপশনে কোন গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করেও কোন তথ্যসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন কোন বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে উল্লিখিত দাবির প্রেক্ষিতে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান ইউনূস সেন্টারের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।
ওই বিবৃতিতে আলোচিত দাবি সম্বলিত ডিজিটাল ব্যানার সংযুক্ত করে জানানো হয়,
“নিম্নে উল্লেখিত উদ্ধৃতিটি যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে প্রচারিত। The quote that is in circulation is false and is calculated to create confusion.”

অর্থাৎ, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ড. ইউনূস উল্লেখিত মন্তব্য করেননি।
মূলত, ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে উল্লিখিত তথ্যটি ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান ইউনূস সেন্টার এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে উল্লিখিত দাবিটিকে মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে প্রচারিত একাধিক ভুয়া বক্তব্যকে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Yunus Center Facebook Post
- Rumor Scanner Own Analysis