বুধবার, অক্টোবর 22, 2025

জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদকে গলায় কোপ দিয়েছেন বর্ষা শীর্ষক কোনো বক্তব্য দেয়নি পুলিশ  

গত ১৯ অক্টোবর বিকেলে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে খুন হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন। উক্ত ঘটনায় এরইমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উক্ত ঘটনা নিয়ে গতকাল (২১ অক্টোবর) একটি প্রেস কনফারেন্স করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

সংবাদ সম্মেলন এবং পুলিশকে জড়িয়ে ‘বর্ষা নিজেই গলায় কোপ দেয় জুবায়েদকে : পুলিশ’ শীর্ষক একটি তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে– গতকাল  (২১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন,… প্রথমে জুবায়েদকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বর্ষার চাপেই হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় সে। এবং নিজেই (বর্ষা) ছুরিকাঘাত করে জুবায়েদকে হত্যা করে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন ইত্তেফাক, সময়ের আলো। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বর্ষা নিহত জুবায়েদকে গলায় কোপ দিয়েছেন’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, গতকাল (২১ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জানান, পরিকল্পনায় বর্ষা ছিল এবং জুবায়েদকে একটা পোচই দেওয়া হয়েছে গলায়। সেই পোচ দিয়েছেন মাহির।

অনুসন্ধানে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গতকাল (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত সম্পূর্ণ সংবাদ সম্মেলনটি লাইভ সম্প্রচার হতে দেখা যায়। 

১৬ মিনিট ০৪ সেকেন্ডের পুরো সংবাদ সম্মেলনটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বর্ষাই জুবায়েদের গলায় কোপ দিয়েছে এ সংক্রান্ত কোন মন্তব্য করেনি পুলিশ। 

লাইভটির ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে পুলিশকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, ‘একটা পোচই দেয়া হয় এবং সেটা দিয়েছে মাহির।’ 

একই সংবাদ সম্মেলনের লাইভ করেছে যমুনা টিভিও। সেখানেও একই মন্তব্য করতে শোনা যায়। 

এছাড়া, ডিএমপি নিউজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোবায়েদ বংশাল থানাধীন ৩১নং ওয়ার্ডস্থ নুর বক্স লেন এর ১৫নং হোল্ডিং রৌশান ভিলায় টিউশনি করাতে গিয়ে বাসার নিচতলার সিঁড়ির নিচে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা বার্জিস শাবনাম বর্ষার সাবেক প্রেমিক মোঃ মাহির রহমান ও তার বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান বাসার নিচে জোবায়েদ পৌঁছালে মাহির জোবায়েদকে বর্ষার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জিজ্ঞেস করে এবং একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে মাহিরের ব্যাগে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু বের করে জোবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার সময় বর্ষা তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল।

অর্থাৎ, বর্ষা নিজেই গলায় কোপ দেয় জুবায়েদকে শীর্ষক কোন বক্তব্য পুলিশ দেয়নি।

সুতরাং, ‘বর্ষা নিজেই গলায় কোপ দেয় জুবায়েদকে : পুলিশ’ শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img