বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনকারী হিসেবে প্রচার করা অস্ত্র হাতে ছবির দুই নারী পাকিস্তানের 

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, এতো মৃত্যু পুলিশের গুলিতে হয়নি, বেশিরভাগ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে নিষিদ্ধ অস্ত্রের গুলিতে, যে অস্ত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছেও নেই, অস্ত্র গুলি একমাত্র ব্যবহার করে – আমেরিকার ন্যাটো জোট ও আমেরিকার গোয়েন্দারা, এটা সে সুক্ষ্মভাবে তদন্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, এতেই তাকে মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো, সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাশের উপর ভর করে ক্ষমতায় আসীন হয়েছে এই ছয় সমন্বয়ক এটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। দ্রুত এদের কে আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের ব্যাবস্থা গ্রহণ করুন। অন্যথায় দেশ ভয়ংকর জঙ্গি আগ্রাসন এর দিকে আগাচ্ছে।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি পোস্ট প্রচার করা হয়। 

সেখানে কয়েকটি ছবি প্রচার করা হয় এর মধ্যে একটি ছবিতে দু’জন বোরকা পরা নারীকে জুলাই আন্দোলনকারী এবং আন্দোলন চলাকালে প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করেছে বলে দাবি করা হয়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনকারী হিসেবে প্রচার করা ছবির এই সশস্ত্র নারী বাংলাদেশি নন বরং এটি ২০২২ সালে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের লিয়ারি নামক স্থানে  স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে তোলা ছবি। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের ওয়েবসাইটে ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল “Grand operation begins in Lyari” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একটি ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ছবির সাথে আলোচিত হুবহু মিল রয়েছে।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,  করাচির লিয়ারি এলাকায় একটি সন্ত্রাস বিরোধী  অভিযান পরিচালনা করা হয়। উক্ত অভিযানে পুলিশ এবং ফ্রন্টিয়ার কনস্টেবুলারির সদস্যরা অংশ নেনউক্ত অভিযানে প্রথমবারের মতো মহিলা পুলিশের একটি দলও অভিযানে অংশ নেয়। 

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় পাকিস্তানভিত্তিক আরেকটি গণমাধ্যম ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল “Operation against gangsters: SHO among 11 killed as Lyari battles heat up” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথেও আলোচিত ছবির স্থান ও ব্যক্তিদের পোশাক ও আনুষঙ্গিক বিষয়বস্তুর মিল পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিটি বাংলাদেশের নয়। 

সুতরাং, পাকিস্তানে ২০১২ সালে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে তোলা ছবিকে জুলাই আন্দোলনকারী দুই সশস্ত্র নারীর ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img