সম্প্রতি, ‘ইন্ডিয়া মোদি সরকার কিভাবে মুসলিমদের উপর নির্যাতন করছে দাড়ি কেটে দিচ্ছে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলমানদের দাঁড়ি কেটে নির্যাতনের দৃশ্যের নয় বরং এটি ২০২০ সালে পাকিস্তানের লাহোরে এক শিশুকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাথার চুল ও দাঁড়ি কেটে দেওয়ার সময়ে ধারণকৃত দৃশ্য।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওতে থাকা এক ব্যক্তিকে পাকিস্তানের পতাকা সম্বলিত টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে আলোচিত ভিডিও থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Ahmad Waqass Goraya Baloch নামের এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে ২০২০ সালের ২১ মে উর্দু ভাষায় দেয়া ক্যাপশনে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “مولوی پانچ سال کی بچی کے ساتھ زیادتی کرتا پکڑا گیا تھا۔ اہل محلہ نے داڑھی اور بھنویں مونڈ دیں”। যা ইংরেজিতে অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, “A cleric was caught raping a five-year-old girl. The locals shaved his beard and eyebrows.”
অর্থাৎ, পাঁচ বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণ করতে গিয়ে এই ব্যক্তি ধরা পড়েন এবং স্থানীয়রা তার দাড়ি এবং ভ্রু কামিয়ে ফেলে বলে জানা যায়।
পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে পাকিস্তানের আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম Tribal News Network এর এক্স একাউন্টে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২০ সালের ২১ মে ‘An enraged mob shaved beard and eyebrows of a man was caught red handed while molesting a five year old girl in Lahore.’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত পোস্টে একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়া, বিষয়টি নিয়ে ২০২০ সালের ২২ মে প্রচারিত লাহোরের পুলিশ অপারেশন্স বিভাগের উপ-মহাপরিদর্শক (অফিশিয়াল একাউন্ট) এর একটি এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের (এক্স পোস্ট) ক্যাপশনে বলা হয়, “এফআইআর নম্বর ১৩৪৬/২০, ধারা ৩৭৬/৫১১ এর অধীনে অভিযুক্ত (আলতাফ হোসেন) এর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।” (অনূদিত)
সুতরাং, ২০২০ সালে পাকিস্তানের লাহোরে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে স্থানীয় জনগণ কর্তৃক চুল ও দাঁড়ি ছেটে দেওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে মুসলমানদের উপরে নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
