আল-আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা দাবিতে সিরিয়ার মসজিদে আজানের পুরোনো ভিডিও প্রচার

২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েল-হামাস সংঘাত ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়। কিন্তু ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল এই চুক্তি ভেঙে গাজা উপত্যকায় আবারও হামলা শুরু করে। এর ফলে সহিংসতা আরও বেড়ে যায়, শত শত ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হন এবং মানবিক পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজান দেওয়ার একটি দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “মসজিদে আল-আকসার বর্তমান অবস্থা”।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বা মসজিদ আল-আকসার নয় বরং সিরিয়ার সরাকিব শহরের বড় মসজিদে অন্তত পাঁচ মাস পুরোনো আজানের ভিডিওকে সম্প্রতি আল-আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সিরিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘Halab Today TV قناة حلب اليوم’ এর ফেসবুক পেজে গত বছরের ৩০ নভেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে আরবি ভাষায় লেখা হয়, “মিলিটারি অপারেশন ম্যানেজমেন্ট ফোর্সের নিয়ন্ত্রণে বছরের মধ্যে এই প্রথম সারাকাব শহরের গ্র্যান্ড মসজিদে নামাজের ধ্বনি উঠছে।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এছাড়া, ‘المكتب الإعلامي لمدينة سراقب وريفها (Saraqib media office)’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকেই একইদিনে ‘সরাকিব বড় মসজিদ’ এ আজানের দৃশ্য দাবিতে উক্ত ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়।

এরই সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে “وزارة الأوقاف السورية” নামক আরেকটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১৪ জানুয়ারিতে পাঁচটি ছবি সম্বলিত প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়; যার মধ্যে একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত মসজিদের অভ্যন্তরীণ দৃশ্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ছবিগুলো সম্পর্কে উক্ত পোস্টটির ক্যাপশনে আরবি ভাষায় বলা হয়, “ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার ডিপার্টমেন্ট সারাকাব শহরের গ্র্যান্ড মসজিদের ক্ষতি মূল্যায়ন করার জন্য একটি ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণা এবং এর পুনর্বাসন প্রস্তুত করার জন্য একটি প্রযুক্তিগত আবিষ্কার করছে…” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি অন্তত পাঁচ মাস পুরোনো এবং প্রদর্শিত মসজিদটি সিরিয়ার সরাকিব শহরের ‘The Grand Mosque’ বা ‘বড় মসজিদ’।

সুতরাং, সিরিয়ার সরাকিব শহরের বড় মসজিদে আজানের ভিডিওকে সম্প্রতি আল আকসা মসজিদের বর্তমান অবস্থা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Halab Today TV قناة حلب اليوم – Facebook Post
  • ‘المكتب الإعلامي لمدينة سراقب وريفها (Saraqib media office) – Facebook Post
  • وزارة الأوقاف السورية – Facebook Post

আরও পড়ুন

spot_img