শনিবার, মে 24, 2025

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধর্ষণ ও হত্যার পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে অপপ্রচার

সম্প্রতি, সামাজিক মাধ্যমে ভুট্টা ক্ষেতে এক নারীর লাশের একটি ভিডিও বাংলাদেশের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে ওই নারীকে ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। একই ভিডিওটি বাংলাদেশে হিন্দু নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দাবিতেও প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নারী ধর্ষণ ও হত্যার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও। ২০২৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বৈষ্ণবনগরে একটি ভুট্টার ক্ষেত থেকে উদ্ধার মৌসুমি মণ্ডল নামের এক নারীর লাশের ভিডিও এটি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Amit Malviya নামের একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে একই ঘটনার একটি ভিডিও যুক্ত করে ঘটনাটি তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। উক্ত পোস্ট থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের। পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে— “..গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি,২০২৪) বৈষ্ণবনগর বিধানসভার সীমান্তবর্তী গ্রাম শবদলপুরে একটি ভুট্টাক্ষেতে ২৭ বছর বয়সী দুই সন্তানের মা মৌসুমী মণ্ডলের মরদেহ পাওয়া যায়।…”

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমসে ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। “মালদায় ফের ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, একই দিনে উদ্ধার ২ দেহ” শিরোনামে প্রকাশিত সে প্রতিবেদনে মৌসুমি মণ্ডলের হত্যার তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে এ ঘটনা নিয়ে বলা হয়, “বৈষ্ণবনগর থানার চরি-অনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই শত বিঘি গ্রামের ভুট্টা খেতে এক গৃহবধূর গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়। নিহতের নাম মৌসুমী মণ্ডল । ছাগল চরাতে গিয়ে তাঁর দেহ দেখতে পায় ২ কিশোর। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, চার দিন আগে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন ওই মহিলা। শুক্রবার তিনি পারিবারিক জমি দেখভাল করতে মাঠে যান। তার পর থেকেই তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দেহ উদ্ধার করে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ। মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান পরিবারের।”

অর্থাৎ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা দাবিতে এবং বাংলাদেশে হিন্দু নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, ভারতের পুরোনো ঘটনার ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশে নারী ধর্ষণ ও হত্যা দাবি করার বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img