মঙ্গল গ্রহের বুকে বেশ কয়েক বছর ধরেই গবেষণা চালাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার রোভার ‘পারসিভারেন্স’। সম্প্রতি মূলধারার সংবাদমাধ্যম ‘এখন টিভি’তে একটি ভিডিও সংবাদে পারসিভারেন্সের সাম্প্রতিক তোলা দাবিতে একাধিক ছবি প্রচার করে বলা হয়, এই ছবিগুলোতে দেখা যায়, মঙ্গলগ্রহের মাটি ও পাথরের মধ্যে পাথরের মতো অবিকল একটি মানুষের মাথা দেখা যাচ্ছে।
এখন টিভি ভিডিও প্রতিবেদনটি তাদের ফেসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করেছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মঙ্গলগ্রহে নাসার পারসিভারেন্স রোভারের সাম্প্রতিক তোলা দাবিতে যে ছবিগুলো গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে তা সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং উক্ত রোভারের তোলাও নয় বরং পূর্বের বিভিন্ন সময়ে মঙ্গল থেকে পাঠানো নাসার বিভিন্ন রোভারের ছবিগুলোকে সাম্প্রতিক সময়ে পাঠানো বলে দাবি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে এখন টিভির ভিডিও প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী সাম্প্রতিক সময়ে নাসার ভিনগ্রহের প্রাণীর অস্তিত্বের গবেষণা সদৃশ কোনো সংবাদের তথ্য মেলেনি। নাসা গত ১৭ অক্টোবর জানায়, তাদের গবেষণার তথ্য বলছে, মঙ্গল গ্রহে বরফের স্তরের নিচে ভিনগ্রহের জীবন লুকিয়ে থাকতে পারে। সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত হয় গবেষণা প্রতিবেদনটি। তবে নাসা তাদের প্রতিবেদনে প্রচারিত ছবিগুলো বা অন্য কোনো ছবির (যা সম্প্রতি মঙ্গল থেকে এসেছে) বিষয়ে উল্লেখ করেনি।
পরবর্তীতে গণমাধ্যমে ছবিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধান করে সংশ্লিষ্ট তিনটি ছবি পূর্বের বিভিন্ন সময়ের বলে প্রমাণ পায় রিউমর স্ক্যানার।
প্রথম ছবি যাচাই
এই ছবিটি মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করা নাসার প্রথম রোবট ভাইকিং-১ তোলে ১৯৭৬ সালের ৩১ জুলাই।
অর্থাৎ, ছবিটি ৪৮ বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো যা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করেছে এখন টিভি।
দ্বিতীয় ছবি যাচাই
এই ছবিটি ২০০৬ সালে মঙ্গল থেকে তোলা। নাসার স্পিরিট রোভার ছবিটি তুলেছিল।
অর্থাৎ, ছবিটি প্রায় ১৮ বছরের পুরোনো, যা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করেছে এখন টিভি।
তৃতীয় ছবি যাচাই
এই ছবিটি এক ব্যক্তির বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহারের বরাতে এখন টিভি প্রচার করেছে। তবে উক্ত ব্যক্তির বক্তব্যের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ইতিহাসভিত্তিক চ্যানেল হিস্টোরির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৩ ডিসেম্বর এই বক্তব্যটি প্রচার করা হয়৷ উক্ত ব্যক্তির নাম জোসেফ হোয়াইট, যিনি মূলত স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ বিশেষজ্ঞ।
তাছাড়া, নাসার কিউরিওসিটি রোভার ২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ছবিটি তুলেছিল৷
অর্থাৎ, ছবিটি ১০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরোনো যা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করেছে এখন টিভি।
সুতরাং, মঙ্গলের সাম্প্রতিক দৃশ্য দাবিতে বিভিন্ন সময়ের পুরোনো ছবি প্রচার করেছে এখন টিভি; যা বিভ্রান্তিকর।