সম্প্রতি, “সন্তানকে শিবিরের নেতা বানাতে চান রাব্বানী” শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানীর কোলে তার নবজাতক সন্তানের ছবিসহ জাতীয় দৈনিক কালবেলা’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমনকিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী সন্তানকে শিবিরের নেতা বানাতে চান বলে কোনো মন্তব্য করেননি এবং দৈনিক কালবেলাও উক্ত শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে কালবেলা’র ফটোকার্ডের ডিজাইন সম্বলিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সেখানে এই সংবাদটি প্রচারের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ২ অক্টোবর ২০২৩।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং কালবেলা’র লোগোর সূত্র ধরে কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২ অক্টোবর প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও কালবেলা’র ওয়েবসাইট কিংবা অন্যকোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
তবে একই দিনে কালবেলা’র ফেসবুক পেজে “সন্তানকে মানবিক নেতা বানাতে চান রাব্বানী” শীর্ষক শিরোনাম বা তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায় এবং এর কমেন্টে একই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস গোলাম রাব্বানী পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন। প্রথম সন্তানের নাম রেখেছেন আরহাম রাইদ। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাব্বানী নিজেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সন্তানকে কোলে নিয়ে তোলা কয়েকটি ছবি শেয়ার করে রাব্বানী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ক্ষুদ্র জীবনে আল্লাহর দেওয়া শ্রেষ্ঠ নেয়ামত, পুত্রসন্তানের জনক। মা-ছেলে ভালো আছে, সবাই দোয়া করবেন।’
অপর এক পোস্টে সন্তানের নাম জানিয়ে লিখেন, ‘আরহাম (দয়ালু, উদার) রাইদ (নেতা) ARHAM RAYEED, (Liberal Leader)। আল্লাহ আমাদের সন্তানকে দেশ ও মানুষের কল্যাণের তরে আদর্শবান, উদার ও মানবিক নেতা হিসেবে কবুল করুক।’
পরবর্তীতে, গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে উক্ত তথ্য সম্বলিত পোস্ট দুইটি খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, গত ২ অক্টোবর কালবেলা’র ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে তাতে ‘সন্তানকে শিবিরের নেতা বানাতে চান রাব্বানী’ শীর্ষক শিরোনাম যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
মূলত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক জিএস গোলাম রাব্বানী পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছেন। এ নিয়ে গত ১ অক্টোবর সন্তান কোলে নিয়ে তোলা একটি ছবি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, আরহাম (দয়ালু, উদার) রাইদ (নেতা) ARHAM RAYEED (Liberal Leader)। আল্লাহ আমাদের সন্তানকে দেশ ও মানুষের কল্যাণের তরে আদর্শবান, উদার ও মানবিক নেতা হিসেবে কবুল করুক। এরই প্রেক্ষিতে দৈনিক কালবেলা’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ‘সন্তানকে মানবিক নেতা বানাতে চান রাব্বানী’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় উক্ত ফটোকার্ডের শিরোনাম বিকৃত করে ‘সন্তানকে শিবিরের নেতা বানাতে চান রাব্বানী’ শীর্ষক শিরোনামে কালবেলা’র ফটোকার্ড দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
প্রসঙ্গত, পূর্বেও কালবেলা’র ফটোর্কাড এডিট করে বিকৃত মন্তব্য প্রচার করা হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো রিউমর স্ক্যানার।
এমনকিছু প্রতিবেদন পড়ুন-
- কালবেলা’র নকল ফটোকার্ডে ওবায়দুল কাদেরের নামে বিকৃত বক্তব্য প্রচার
- কালবেলা’র ফটোকার্ড এডিট করে পিটার হাসের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার
- কালবেলা’র ফটোকার্ড নকল করে প্রধানমন্ত্রীর নামে ভুয়া তথ্য প্রচার
সুতরাং, মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলাকে উদ্ধৃত করে ‘সন্তানকে শিবিরের নেতা বানাতে চান রাব্বানী’ শীর্ষক দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা এবং উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা বিকৃত।
তথ্যসূত্র
- Kalbela – Facebook Page
- Kalbela – Website
- Kalbela – Facebook Post
- Kalbela- সন্তানকে মানবিক নেতা বানাতে চান রাব্বানী
- Golam Rabbani Facebook Post
- Rumor Scanner’s Own Analysis