সম্প্রতি “ওরা দুইজন দুই দেশের নাগরিক। দুটি ভিন্ন দলের অধিনায়ক কিন্তু সম্পর্কে ওরা আপন ভাই-ভাই। ওদের দুইজনেরই বাবা শিব আর মা পার্বতী।” “ইতিহাসের প্রথম দুই দেশের হিন্দু অধিনায়ক আজ মাঠে নামল” শীর্ষক শিরোনামের একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ভারত ক্রিকেট সিরিজে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দু’দলের অধিনায়ক হিন্দু ছিলেন না বরং পূর্বেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ভারতের ক্রিকেট সিরিজে দু’দলের অধিনায়ক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ESPNCricinfo এর ওয়েবসাইটে ২০০৫ সালের ৩১ শে জুলাই ত্রিদেশীয় ইন্ডিয়ান ওয়েল কাপ টুর্নামেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারতের ম্যাচের পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। উক্ত পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচে দু’দলের অধিনায়কই হিন্দু ছিলেন।

ম্যাচের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের একাদশ পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের হিসেবে দায়িত্বপালন করেন শিবনারায়ণ চন্দরপল এবং ভারতের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন রাহুল দ্রাবিড়।
এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসে গত ১৯ জুন প্রকাশিত “India vs South Africa 5th T20 Highlights: Match called off after rain plays spoilsport; series ends level at 2-2” শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিসের ৫ম ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়কের উপস্থিতিতে অধিনায়ক ছিলেন কেশব মহারাজ। অপরদিকে ভারতের হয়ে অধিনায়কের দায়িত্বপালন করেন ঋষভ পন্ত।

উক্ত ম্যাচেও দু’দলের অধিনায়ক হিসেবে দুজন হিন্দু ছিলেন।
এছাড়াও, ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ESPNCricinfo এর ওয়েবসাইটে গত ৯ অক্টোবর ভারতের রাচিতে অনুষ্ঠিত সাউথ আফ্রিকা বনাম ভারতের ম্যাচের একটি পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। উক্ত পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ করেও উভয় দলের অধিনায়ক হিসাবে দুজন হিন্দু ক্রিকেটারকে দায়িত্বপালন করতে দেখা যায়।
উক্ত ম্যাচে ভারতের হয়ে শেখর ধাওয়ান ওবং দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অধিনায়কত্ব করেন কেশব মহারাজ।

মূলত, ভারতের সাথে ইতিমধ্যে সাউথ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার অনুষ্ঠিত ক্রিকেট ম্যাচে দু’দলেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত বাংলাদেশ ক্রিকেট সিরিজে বাংলাদেশের লিটন দাসকে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষনা করায় ইতিহাসে প্রথমবার দু’দলের অধিনায়ক হিন্দু দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, চলমান ভারত বাংলাদেশ ক্রিকেট সিরিজে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুজন হিন্দু ক্রিকেটারের নিজস্ব দলকে অধিনায়কত্ব করার দাবিটি প্রচারিত হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।