সম্প্রতি, নীলফামারীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা এক আওয়ামী লীগ নেতার খামার পুড়িয়ে দিয়েছে বলে একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবির স্বপক্ষে একটি ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে একটি পোড়া ঘরে আগুনে দগ্ধ কিছু গবাদিপশু দেখা যাচ্ছে। একই ছবি ব্যবহার করে এক্সে দাবি করা হয়েছে, হিন্দু বাড়ির গোয়ালঘর দেখে ধর্মীয় প্রতিহিংসার জেরে ড. ইউনূসের সমর্থকরা আগুন লাগিয়েছে উক্ত স্থানে।

আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে আগুন দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
হিন্দু হওয়ায় আগুন লাগানো হয়েছে দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নীলফামারীতে আওয়ামী লীগ নেতার খামারে আগুন দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি হিন্দুও নয় বরং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক মুসলিম ব্যক্তির গোয়াল ঘরে দুর্ঘটনাবশত আগুন লাগার ঘটনাকে আওয়ামী লীগ নেতার খামারে আগুন দেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গত বছরের (২০২৪) ৯ ডিসেম্বর গণমাধ্যম ‘দি জনতা নিউজ’ এর ওয়েবসাইটে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে গোয়াল ঘরে আগুন লেগে গরু-ছাগল পুড়ে ছাই” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার। উক্ত প্রতিবেদনে পাওয়া ছবির সাথে আলোচিত পোস্ট গুলোতে ব্যবহৃত ছবির মিল রয়েছে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগরের বালুয়াটি গ্রামে মো. বেদন মিয়ার গোয়াল ঘর আগুন পোড়ার পরের দৃশ্য এটি। প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায়, সবার ধারণা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে, অর্থাৎ পরিকল্পিত ভাবে আগুন দেওয়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner
এছাড়াও প্রতিবেদনে কোথাও মো. বেদন মিয়ার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া, ভুক্তভোগীর নাম মো: বেদন মিয়া। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় তিনি মুসলিম, অর্থাৎ ধর্মীয় প্রতিহিংসা থেকে আগুন লাগানোর দাবিটিও সত্য নয়।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে স্বাধীন সূর্যোদয়, জাগ্রত বাংলা সহ আরো কয়েকটি স্থানীয় গণমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে নিশ্চিত করা হয় আগুন পরিকল্পিত ভাবে লাগানো হয়নি এবং ভুক্তভোগীর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারেও কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
সুতরাং, নীলফামারীতে হিন্দু এবং আওয়ামী লীগ নেতার খামারে জামায়াতে ইসলামির নেতাকর্মীরা আগুন দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।